গরমকালে স্কিইংয়ের সুযোগ! যুক্তরাষ্ট্রের রকি পর্বতমালায় আকর্ষণীয় ঘটনা!

বরফের দেশ না হয়েও গ্রীষ্মকালে স্কিইংয়ের সুযোগ!

আপনি যদি শীতকালের খেলা স্কিইংয়ের কথা ভেবে থাকেন, তাহলে হয়তো আমেরিকার একটি বিশেষ স্কিইং এলাকার কথা শোনেননি। জায়গাটির নাম বিয়ারটুথ বেসিন (Beartooth Basin)। এটি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইমিং-মন্টানা সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে গ্রীষ্মকালে স্কি করার সুযোগ থাকে।

এই গ্রীষ্মকালীন স্কি করার ধারণাটি হয়তো অনেকের কাছে নতুন। সাধারণত মে মাসের শেষের দিকে এই স্কিইং এলাকাটি খোলা হয় এবং জুলাই মাসের শুরু পর্যন্ত, বরফ গলার আগে পর্যন্ত এটি চালু থাকে। গত বছর, ২০২৩ সালে এটি এক মাসের কম সময়ের জন্য খোলা ছিল এবং তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে, এখানে স্কি করার কোনো সুযোগ ছিল না।

এই বিশেষ স্কিইং এলাকার প্রধান আকর্ষণ হলো এর নৈসর্গিক দৃশ্য এবং স্কি করার অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এখানে কোনো বিলাসবহুল লজ বা কন্ডো নেই, বরং স্কি করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা বিদ্যমান। প্রায় ৬০০ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই স্কিইং অঞ্চলে দুটি পুরনো ধাঁচের পোমা লিফট (Poma lifts) রয়েছে, যা স্কিয়ারদের পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উপরে উঠতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এখানে রয়েছে বিশাল আকারের একটি কর্নিস (cornice), যা স্কিয়ারদের স্কি করার জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

**বিয়ারটুথ বেসিনের বিশেষত্ব**

বিয়ারটুথ বেসিনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো এর অবস্থান। এটি প্রায় ১০,৯০০ ফুট উচ্চতায় বিয়ারটুথ পাসের (Beartooth Pass) উপরে অবস্থিত। এই স্থানে পৌঁছানোর একমাত্র উপায় হলো বিয়ারটুথ হাইওয়ে (Beartooth Highway) ধরে যাত্রা করা। এই রাস্তাটিকে “আমেরিকার সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা” হিসেবেও অনেকে বর্ণনা করে থাকেন। এই রাস্তাটি মন্টানার রেড লজ (Red Lodge) থেকে শুরু হয়ে ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের (Yellowstone National Park) উত্তর-পূর্ব দিকে গেছে।

**ভিসা এবং টিকিট সংক্রান্ত তথ্য**

যেহেতু জায়গাটি আমেরিকার, তাই সেখানে যেতে হলে অবশ্যই ভিসার প্রয়োজন হবে। আর স্কি করার জন্য টিকিট তো লাগবেই। এখানে টিকিট কেনার কিছু বিশেষ নিয়ম রয়েছে। সাধারণত, টিকিট সরাসরি কাউন্টারে নগদ অথবা চেকের মাধ্যমে কিনতে হয়। অনলাইনেও টিকিট কেনার ব্যবস্থা আছে, তবে তা ফেরতযোগ্য নয়। একদিনের টিকিটের দাম প্রায় $50 (ডলার), যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫,৯০০ টাকার সমান। হাফ-ডে টিকিট, যা দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়, তার দাম $40 (ডলার), যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪,৭০০ টাকার সমান। প্রতিদিন এখানে সর্বোচ্চ ১০০ জন স্কিয়ার স্কি করার সুযোগ পান।

**ভ্রমণের আগে যা জানা জরুরি**

বিয়ারটুথ বেসিনে স্কি করতে যাওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে রাখা ভালো। আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং রাস্তার পরিস্থিতির কারণে অনেক সময় রাস্তা বন্ধ থাকে। তাই যাত্রা করার আগে বিয়ারটুথ বেসিনের সামাজিক মাধ্যম (instagram.com/beartoothbasin) এবং রাস্তার অবস্থা সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। মন্টানা অংশের রাস্তার অবস্থা জানতে 511mt.net এবং ওয়াইমিং অংশের জন্য wyoroad.info ওয়েবসাইটগুলো অনুসরণ করতে পারেন।

গ্রীষ্মকালে স্কি করার এই অসাধারণ সুযোগটি সম্ভবত বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা হতে পারে। যারা নতুন কিছু চেষ্টা করতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য বিয়ারটুথ বেসিন হতে পারে একটি স্মরণীয় গন্তব্য।

তথ্য সূত্র: Travel and Leisure

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *