সুমিতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছেন বহু বেসামরিক নাগরিক, যার মধ্যে রয়েছে শিশুও। রবিবার সকালে চালানো এই হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহল।
এই পরিস্থিতিতে, ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী শহর সুমিতে চালানো এই হামলায় দুটি উচ্চগতির ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয় বলে জানা গেছে। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ক্লাস্টার বোমা বহন করছিল।
হামলায় একটি ট্রলিবাস ও কয়েকটি গাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে হতাহতদের মরদেহ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪, যার মধ্যে ২ জন শিশু।
এই ঘটনার পর, রাশিয়ার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইচ্ছাকৃত হামলার অভিযোগ উঠেছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে এমন হামলা নজিরবিহীন।
অন্যদিকে, এই ঘটনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। তবে, এই আলোচনা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন উপদেষ্টা সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠকে ইউক্রেনের চারটি প্রদেশ—যেগুলো বর্তমানে রাশিয়ার আংশিক দখলে রয়েছে—সেগুলো রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এই প্রস্তাবের মাধ্যমে দ্রুত যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
তবে, সুমিতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনা এবং একই সময়ে শান্তি আলোচনার বিষয়টি অনেকের কাছে পরস্পরবিরোধী বলে মনে হচ্ছে। কারণ, যখন রাশিয়া দিনের আলোয় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, তখন তাদের সঙ্গে আলোচনা কতটা যৌক্তিক, সেই প্রশ্ন উঠছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রথমে এই হামলার কড়া নিন্দা জানানো হয়নি। যদিও পরে দেশটির পক্ষ থেকে রাশিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে ঘটনার নিন্দা জানানো হয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আশা করছেন, ট্রাম্প হয়তো ধীরে ধীরে উপলব্ধি করবেন যে পুতিন আলোচনার টেবিলে আন্তরিক নন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুমিতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান