সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মামলা: ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রায়!

ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের মামলা করার অনুমতি দিল মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি এক রায়ে আদালত জানিয়েছেন, ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণের জন্য ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (Palestinian Authority) বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে।

এই রায়ের ফলে ফিলিস্তিন-সংক্রান্ত গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জড়িত অন্য কোনো সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরাও ভবিষ্যতে মার্কিন আদালতে ক্ষতিপূরণের জন্য মামলা করার সুযোগ পেতে পারেন।

মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস এই রায়টি লিখেছিলেন এবং এতে আদালতের সকল বিচারপতি একমত হয়েছেন।

বিচারপতি রবার্টস তার রায়ে উল্লেখ করেছেন, “মার্কিন নাগরিকদের ওপর যারা সহিংসতা চালায়, তাদের জবাবদিহি করার ক্ষেত্রে জাতীয় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।” এমনকি, তারা যদি আমাদের সীমান্তের বাইরেও কোনো অপরাধ করে, সেক্ষেত্রেও মার্কিন আইন তাদের সুরক্ষা দিতে পারে।

আদালতের এই সিদ্ধান্তের মূল বিষয় ছিল, কংগ্রেসের ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা (Palestine Liberation Organization) এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে মামলা করার এখতিয়ার আছে কিনা।

এর ফলে, ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণের জন্য মামলা করতে পারবে। এই মামলাগুলো মূলত ২০০০ সালের দিকে দ্বিতীয় ইন্তিফাদা (Second Intifada) থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের অভ্যন্তরে সংঘটিত কিছু মারাত্মক হামলার সঙ্গে সম্পর্কিত।

মামলার বাদী ছিলেন, আরি ফুল্ড নামের একজন মার্কিন নাগরিক। ২০১৮ সালে ইসরায়েলের পবিত্র স্থানগুলোর মধ্যে একটিতে ইহুদিদের প্রার্থনার স্থান তৈরির জন্য পিএলও-র চেয়ারম্যানের দাবির কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি ছুরিকাঘাতের শিকার হন।

আদালতের রেকর্ড অনুযায়ী, ২০১৫ সালে একটি ফেডারেল আদালত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে ক্ষতিগ্রস্তদের ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

বাংলাদেশি টাকায় (বিডিটি) এর পরিমাণ প্রায় ৭১০০ কোটি টাকার সমান (১ মার্কিন ডলার = ১১০ বিডিটি)।

তবে, নিউইয়র্কের একটি ফেডারেল আপিল আদালত এই রায় বাতিল করে দেয়।

আদালত জানায়, পিএলও এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের ওপর আদালতের এখতিয়ার নেই।

এই মামলার শুনানির সময়, সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে তারা এই বিষয়ে অন্যান্য বিভাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে আগ্রহী।

বিচারপতি ব্র্রেট কাভানাফ উল্লেখ করেন, আদালত সাধারণত কংগ্রেস এবং প্রেসিডেন্টের নেওয়া বৈদেশিক নীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে না।

ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ তাদের যুক্তিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের কোনো “সাংবিধানিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক” নেই।

তাই, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনে সংঘটিত হামলার জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে ফেডারেল আদালতে মামলা করার অনুমতি দেওয়া হলে তা “যুক্তিসঙ্গত প্রক্রিয়ার লঙ্ঘন” হবে।

এই রায়ের ফলে আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থা এবং সন্ত্রাসবাদের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের অধিকারের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *