মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি করতে রাজি হয়েছে। মামলাটি সরাসরি অঙ্গরাজ্য সরকারগুলোর ক্ষমতা এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া সংস্থাগুলোর অধিকারের মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে।
বিষয়টির কেন্দ্রবিন্দু হলো, অঙ্গরাজ্য সরকারগুলো কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য চেয়ে সমন (subpoena) জারি করতে পারে কিনা।
মামলাটি মূলত নিউ জার্সির একটি ‘ক্রাইসিস প্রেগন্যান্সি সেন্টার’-এর (Crisis Pregnancy Center) সঙ্গে সম্পর্কিত। এই ধরনের কেন্দ্রগুলো সাধারণত গর্ভপাতের বিরোধী এবং তাদের মূল লক্ষ্য থাকে নারীদের গর্ভাবস্থা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করা।
নিউ জার্সির অ্যাটর্নি জেনারেল এই কেন্দ্রটির বিরুদ্ধে সেখানকার গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে, অ্যাটর্নি জেনারেল কেন্দ্রটির কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য চেয়ে সমন জারি করেন।
এই সমনে বিজ্ঞাপন, অনুদান সংগ্রহ এবং চিকিৎসা বিষয়ক কর্মীদের পরিচিতি জানতে চাওয়া হয়।
কেন্দ্রটির বক্তব্য হলো, এই সমন তাদের প্রথম সংশোধনী অধিকার (First Amendment rights) লঙ্ঘন করে। তাদের মতে, এর মাধ্যমে মূলত তাদের দাতাদের নাম জানতে চাওয়া হচ্ছে, যা তাদের গোপনীয়তার অধিকারের পরিপন্থী।
তারা আরও মনে করে যে, এই ধরনের পদক্ষেপ সম্ভবত সুপ্রিম কোর্টের আগের একটি সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যেখানে আদালত, একটি রক্ষণশীল সংস্থার সদস্যদের নাম প্রকাশের বাধ্যবাধকতাকে অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন।
এই মামলার সূত্রপাত হয় যখন নিউ জার্সি কর্তৃপক্ষ, সম্ভবত ভোক্তা সুরক্ষা আইনের অধীনে তদন্তের অংশ হিসেবে, কেন্দ্রটিকে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কিত তথ্য সরবরাহ করতে বলে।
রাজ্যের কর্মকর্তারা সন্দেহ করেন যে, কেন্দ্রটি তাদের বিপণন কৌশলের মাধ্যমে রোগীদের ভুল বুঝিয়ে থাকতে পারে, যার ফলে তারা হয়তো এমনটা মনে করতে পারেন যে, সেখানে গর্ভপাতের সুযোগ রয়েছে।
তবে, এর আগে একটি ফেডারেল আপিল আদালত এই মামলার বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে। আদালত জানায়, রাজ্য আদালত এখনো পর্যন্ত এই সমন কার্যকর করেনি, তাই ফেডারেল আদালতে শুনানির জন্য বিষয়টি প্রস্তুত নয়।
এখন, সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার শুনানির জন্য রাজি হওয়ায়, এর ফলাফল ধর্মীয় স্বাধীনতা, রাজ্যের ক্ষমতা এবং ভোক্তা অধিকারের মধ্যেকার সম্পর্ককে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে পারে। এই মামলার রায় শুধু নিউ জার্সির ক্ষেত্রেই নয়, বরং সারা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন