যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে ভোটাভুটির অভাবে ওকলাহোমায় একটি ক্যাথলিক চার্টার স্কুল স্থাপনের পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। এই ঘটনার জেরে রাজ্যের করদাতাদের অর্থে স্কুলটি চালু করার সম্ভাবনাও আপাতত বন্ধ হয়ে গেল।
খবর অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে ৪-৪ ভোটে ঐকমত্য না হওয়ায় এমনটা হয়েছে।
ওকলাহোমার সেন্ট ইসিডোর অফ সেভিল ক্যাথলিক ভার্চুয়াল স্কুল নামের এই প্রতিষ্ঠানটি চালু করার জন্য রাজ্য সরকারের অনুমোদন চেয়েছিল। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ধর্মীয় চার্টার স্কুল হতে যাচ্ছিল, যেখানে ক্যাথলিক ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
তবে, আদালত এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ায়, এটি আর আলোর মুখ দেখছে না।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনে, চার্টার স্কুলগুলো সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত হলেও, তারা প্রচলিত পাবলিক স্কুল ব্যবস্থার থেকে আলাদাভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। তবে, এক্ষেত্রে ধর্মীয় স্কুল প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বিতর্ক তৈরি করেছে, কারণ এতে ‘ধর্ম ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণ’ নীতি লঙ্ঘিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সমালোচকরা বলছেন, এই ধরনের স্কুল চালু হলে তা পাবলিক স্কুলগুলোর তহবিল হ্রাস করবে এবং অন্যান্য রাজ্যেও একই ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে।
আদালতের শুনানিতে বিচারপতিদের মধ্যে ভিন্ন মত দেখা গেছে। রক্ষণশীল মনোভাবাপন্ন বিচারপতিরা স্কুলটির পক্ষে মত দিলেও, উদারপন্থী বিচারপতিরা এর বিরোধিতা করেন।
প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস-এর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছিল সবকিছু, এবং ধারণা করা হচ্ছে তিনি সম্ভবত বিরোধীদের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, যার ফলে এই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে ওকলাহোমার আদালতে আসা আগের একটি রায় বহাল থাকল, যেখানে স্কুলটিকে অনুমোদন দেওয়ার বিরুদ্ধে মত দেওয়া হয়েছিল।
তবে, যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি, তাই ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আবার শুনানি হতে পারে।
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে, বিশেষ করে রক্ষণশীল রাজ্যগুলোতে, পাবলিক স্কুলগুলোতে ধর্মীয় প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে কিছু রাজ্যে ক্লাসরুমে বাইবেল প্রদর্শনের মতো পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।
এই মামলার শুনানিতে, স্কুল কর্তৃপক্ষ চেয়েছিল যেন তাদের শিক্ষার্থীদের ক্যাথলিক ধর্মানুসারে দীক্ষা দেওয়া হয়।
তবে, এই ধরনের ধর্মীয় স্কুল সরকারি অর্থে পরিচালিত হতে পারে কিনা, সেই বিষয়ে এখনও বিতর্ক চলছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে, যারা পাবলিক শিক্ষাব্যবস্থা রক্ষা করতে চান, তারা এটিকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তাদের মতে, একটি ধর্মীয় স্কুল কোনোভাবেই পাবলিক স্কুল হতে পারে না এবং পাবলিক স্কুলকে ধর্মীয় কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত করা উচিত নয়।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস