যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে আরোপিত শুল্ক সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি শুরু হতে যাচ্ছে। এই মামলার রায় বাণিজ্য চুক্তি এবং প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলার শুল্ক রাজস্বের উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
মামলাটি মূলত ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ার্স অ্যাক্ট (IEEPA) নামক আইনের অধীনে ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বৈধতা নিয়ে। এই আইনের বলেই ট্রাম্প ভারত ও ব্রাজিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারদের উপর শুল্কের হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত এবং চীনের উপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছিলেন।
যদি সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রায় দেয়, তবে এর ফলস্বরূপ বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তিগুলোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এমনকি, এর ফলে কোম্পানিগুলোকে ইতোমধ্যেই পরিশোধিত বিলিয়ন ডলার ফেরত দিতে হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার পেট্রোল-এর তথ্য অনুযায়ী, ২৩শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমেরিকান ব্যবসায়ীরা IEEPA-এর অধীনে আরোপিত শুল্ক পরিশোধ করতে প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। এই পরিমাণ অর্থ গত অর্থবছরের মোট শুল্ক রাজস্বের অর্ধেকের বেশি।
এই মামলার রায় বাণিজ্য চুক্তিগুলোর ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে। কারণ, উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের ক্ষমতা ব্যবহার করে ট্রাম্প বিভিন্ন দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে বাধ্য করেছিলেন। এর বিনিময়ে দেশগুলো মার্কিন পণ্য বেশি পরিমাণে কিনতে এবং সেখানে বিনিয়োগ করতে রাজি হয়েছিল।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে এই চুক্তিগুলোও হুমকির মুখে পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি আদালত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রায় দেয়, তবে এর ফলে বাণিজ্য চুক্তিগুলোতে পরিবর্তন আসতে পারে। এমনকি, ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানির উপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করতে পারে।
যদিও কোনো রায় ট্রাম্পের অন্যান্য শুল্ক আরোপের ক্ষমতাকে সরাসরি প্রভাবিত করবে না, তবে IEEPA-এর অধীনে শুল্ক আরোপের ক্ষমতা হারানোটা তার বাণিজ্য নীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা হতে পারে। কারণ, এই আইনের মাধ্যমে তিনি দ্রুত শুল্কের হার পরিবর্তন করতে পারতেন, যা অন্যান্য আইনের মাধ্যমে সম্ভব ছিল না।
তথ্য সূত্র: সিএনএন