যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ‘ভূতুড়ে বন্দুক’ বিষয়ক বিধিনিয়ম বহাল রাখল
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ‘ভূতুড়ে বন্দুক’ (ghost guns) সংক্রান্ত ফেডারেল বিধি বহাল রেখেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে সহজে শনাক্ত করা যায় না এমন বন্দুক তৈরির কিট প্রস্তুতকারকদের এইগুলোর সিরিয়াল নম্বর যুক্ত করতে হবে এবং ক্রেতাদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক বা পূর্ব-ইতিহাস পরীক্ষা করার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবারের এই রায়ে রক্ষণশীল বিচারকদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল, যা বন্দুক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গোষ্ঠীগুলোর জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বিজয়।
২০২২ সালে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এই নতুন নিয়মগুলো চালু করে। এই বিধিনিয়মের মূল উদ্দেশ্য ছিল, অস্ত্র বিষয়ক অপরাধ কমাতে সহায়তা করা।
কারণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লক্ষ্য করেছে, অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা প্রায়ই এমন সব অস্ত্র ব্যবহার করছে যেগুলোর কোনো হদিস থাকে না। এসব অস্ত্র তৈরি করা হয় এমন কিট বা সরঞ্জাম ব্যবহার করে যা সহজে অনলাইনে পাওয়া যায়।
এই কিটগুলোর মাধ্যমে ঘরে বসেই যে কেউ শনাক্ত করা কঠিন এমন বন্দুক তৈরি করতে পারে।
আদালতের শুনানিতে বিচারক গোরসাচ তার রায়ে উল্লেখ করেছেন, “১৯৬৮ সালে যখন কংগ্রেস গান কন্ট্রোল অ্যাক্ট অনুমোদন করে, সেই সময়ের তুলনায় বর্তমানে বন্দুক তৈরির পদ্ধতি এবং বিক্রি করার ধরনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এখন থ্রিডি প্রিন্টিং এবং উন্নত পলিমারের ব্যবহার বেড়েছে, যার কারণে বন্দুক তৈরি করা আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়ে গেছে।
তবে, এই রায়ের বিপক্ষে মত দিয়েছেন রক্ষণশীল বিচারপতি ক্লেরেন্স থমাস। তিনি বলেছেন, এই রায়ে সরকারের ক্ষমতা বিস্তারের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
বিচারপতি থমাস ফেডারেল আইনের একটি সংকীর্ণ ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যেখানে অস্ত্র তৈরির কিটগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে।
এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জন রবার্টস-সহ আরও কয়েকজন বিচারক এই কিটগুলোর মাধ্যমে বন্দুক তৈরির বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়ার বিপক্ষে মত দেন।
তারা জানান, শখের বশে ক্লাসিক গাড়ি মেরামতের সঙ্গে এই কিট দিয়ে বন্দুক বানানোর তুলনা করা যায় না। তাদের মতে, এই কিটগুলো তৈরি করা হয়েছে মূলত সহজে বন্দুক বানানোর উদ্দেশ্যে, শখের বশে কাজ করার জন্য নয়।
উল্লেখ্য, এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল কিছু ব্যক্তি এবং বন্দুক প্রস্তুতকারক কয়েকটি কোম্পানির পক্ষ থেকে। তাদের যুক্তি ছিল, সরকার এই বিধিনিয়ম তৈরি করে আইনের লঙ্ঘন করেছে।
তাদের মতে, এই কিটগুলো আসলে অস্ত্রের অংশ, তাই এগুলোর ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা যায় না। তবে, সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে বাইডেন প্রশাসনের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকল।
তথ্য সূত্র: সিএনএন