সুইডেনে মহাকাব্যিক মোষের যাত্রা, লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সমাপ্তি!

লক্ষ লক্ষ দর্শকের সাক্ষী, ৪৭৮ ঘণ্টার ম্যারাথন সম্প্রচারের পর অবশেষে শেষ হলো সুইডেনের ‘গ্রেট মুজ মাইগ্রেশন’।

দূর উত্তরের বরফঢাকা অরণ্য আর নদী পেরিয়ে শীতের শেষে গ্রীষ্মের চারণভূমিতে মুজ-দের (ইউরোপীয় এল্ক নামেও পরিচিত) যাত্রা প্রতি বছরই এক বিশেষ দৃশ্য। আর এবার, সুইডেনের জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম এসভিটি প্লে’র সৌজন্যে, সেই দুর্লভ দৃশ্য সরাসরি উপভোগ করেছেন সারা বিশ্বের দর্শক।

গত ১৫ই এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই লাইভ স্ট্রিমিং চলে একটানা প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে। প্রায় ৯ মিলিয়ন দর্শক এই বিরল দৃশ্য দেখেছেন, যেখানে ক্যামেরাবন্দী হয়েছে প্রায় ৭০টি মুজের (moose) বসন্তের আগমনী যাত্রা।

সুদূর উত্তরে, স্টকহোমের ২৮৯ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত অ্যাংগারম্যান নদী পাড়ি দেওয়ার দৃশ্য ছিল অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। এসভিটি’র প্রকল্প পরিচালক জোহান এরহাগ জানিয়েছেন, ২৬টি রিমোট ক্যামেরা, ৭টি নাইট-ভিশন ক্যামেরা এবং একটি ড্রোন ব্যবহার করে মোট ৪৭৮ ঘণ্টার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।

এই ‘স্লো টিভি’র ধারণাটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ২০০৯ সালে নরওয়ের এনআরকে (NRK) চ্যানেলে বার্গেন থেকে অসলো পর্যন্ত সাত ঘণ্টার একটি ট্রেন যাত্রার সরাসরি সম্প্রচার হয়।

এরপর থেকেই ধীরে ধীরে এই ধরনের অনুষ্ঠান ইউরোপে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। ১২ ঘণ্টার বুনন প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে ১৩৪ ঘণ্টার সমুদ্রযাত্রা, এমনকি অগ্নিকুণ্ডের লাইভ স্ট্রিমিংও দর্শকদের মন জয় করেছে।

মুজদের এই যাত্রা শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগই দেয়নি, বরং এটি সুইডেনের সংস্কৃতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

এসভিটি জানিয়েছে, যখনই কোনো মুজের দেখা মিলত, তখনই তারা দর্শকদের জন্য বিশেষ নোটিফিকেশন পাঠাতো। এমনকি, ৭৬,০০০ এর বেশি সদস্যের একটি ডেডিকেটেড ফেসবুক গ্রুপে এই দৃশ্যগুলির ছবি, স্ক্রিনশট এবং পরবর্তী মুজের আগমন নিয়ে জল্পনা চলত।

যদিও এবছরের দর্শকদের চূড়ান্ত পরিসংখ্যান এখনো প্রকাশ করা হয়নি, তবে এসভিটি নিশ্চিত করেছে যে আগামী বছরও এই ‘গ্রেট মুজ মাইগ্রেশন’ সম্প্রচারিত হবে।

প্রকৃতির এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন সকলে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *