আতঙ্কে দেশছাড়া শ্বেতাঙ্গরা: শরণার্থী হয়ে ট্রাম্পের আমেরিকায়!

দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়

দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকান সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য বর্ণ বৈষম্য এবং ভূমি সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাদের শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করেছে। এই ঘটনা বর্তমানে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেশ আলোচিত হচ্ছে।

আফ্রিকার এই শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী মূলত ডাচ উপনিবেশ স্থাপনকারীদের বংশধর। এক সময় তারা দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী ‘অ্যাপারথাইড’ শাসনের নেতৃত্ব দিয়েছিল। বর্তমানে তারা দক্ষিণ আফ্রিকায় সংখ্যালঘিষ্ঠ, তবে দেশটির অধিকাংশ জমির মালিকানা তাদের হাতেই রয়েছে। তাদের অভিযোগ, বর্তমানে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং তাদের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই আফ্রিকানদের উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় দেওয়ার পক্ষে ছিলেন। তিনি তাদের ওপর হওয়া নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছিলেন, যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার তা অস্বীকার করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার জানায়, ভূমি পুনরুদ্ধার আইন (land expropriation) মূলত ঐতিহাসিক বৈষম্য দূর করার উদ্দেশ্যে প্রণীত হয়েছে এবং এর ফলে কারও জমি কেড়ে নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এই পরিস্থিতিতে যারা দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলছেন, তারা মূলত এখানকার পরিবর্তনগুলো মেনে নিতে পারছেন না। তাদের মতে, সমাজে শ্বেতাঙ্গদের আগের মতো সম্মান ও সুযোগ-সুবিধা কমে গেছে। অনেকে আবার এখানকার ক্রমবর্ধমান অপরাধ এবং জাতিগত পরিবর্তন বিষয়ক আইনকে তাদের উদ্বেগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার এবং বিভিন্ন বিশ্লেষক মনে করেন, শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের মধ্যে অনেকেই নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না। তারা চান, অতীতে তাদের যে বিশেষ সুবিধা ছিল, তা বজায় থাকুক।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এই বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে, যেমন টেক্সাস, নিউ ইয়র্ক, এবং আইডাহোতে আশ্রয় গ্রহণকারীরা নতুন জীবন শুরু করার চেষ্টা করছেন। তাদের এক বছর মেয়াদে শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এরপর তারা যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই ঘটনার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার সমাজে বিভেদ আরও বাড়তে পারে। তবে দেশটির সরকার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে এবং শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *