সুইজারল্যান্ডের একটি বিখ্যাত আর্ট মিউজিয়ামে প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি: প্রথম বোটানিক্যাল কিউরেটর নিয়োগ।
সুইজারল্যান্ডের বাসেলের কাছে অবস্থিত ফন্ডেশন বেয়েলার মিউজিয়াম, আধুনিক ও সমসাময়িক শিল্পকলার এক উজ্জ্বল কেন্দ্র। এবার তারা তাদের সংগ্রহশালার পাশাপাশি বাগানের দিকেও মনোযোগ দিচ্ছে।
সম্প্রতি, তারা তাদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন বোটানিক্যাল কিউরেটর নিয়োগ দিয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ পদে এসেছেন সুইস অ্যাকাডেমিক রাহেল কesselরিং।
এই নিয়োগ নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কারণ, কোনো প্রধান আর্ট মিউজিয়ামে এমন পদ সম্ভবত এটাই প্রথম।
কিউরেটর হিসেবে রাহেল কesselরিং-এর প্রধান দায়িত্ব হবে—মিউজিয়ামের বাগান ও এর উদ্ভিদকুলকে সংরক্ষণ করা এবং বাগানকেন্দ্রিক বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি তৈরি করা।
এই প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বিখ্যাত ফরাসি ফ্যাশন ব্র্যান্ড শ্যানেলের একটি দাতব্য সংস্থা, ‘শ্যানেল কালচার ফান্ড’।
ফন্ডেশন বেয়েলার-এর পরিচালক স্যাম কেলার এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “প্রকৃতি আমাদের কাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, এটি কোনো ব্যাকড্রপ নয়।
এই পদে নিয়োগ আমাদের এই স্থানের সমগ্র পরিবেশের প্রতি গভীর মনোযোগ এবং দায়িত্বশীলতার প্রমাণ।”
রাহেল কesselরিং-এর মতে, তাঁর প্রধান লক্ষ্য হলো শিল্প ও প্রকৃতির মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করা।
তিনি বলেন, “উদ্ভিদ আমাদের সংস্কৃতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।
আমরা এমন একটি বিশ্বে বাস করি, যা সম্পূর্ণরূপে উদ্ভিদের দ্বারা তৈরি হয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের শারীরিক, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক গভীর সম্পর্ক রয়েছে।”
এই পদক্ষেপ শুধু একটি মিউজিয়ামের গণ্ডি পেরিয়ে পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি মনোযোগ দেওয়ার একটি দৃষ্টান্ত।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমস্যাগুলো এখন শিল্পকলার জগৎকেও প্রভাবিত করছে।
এমন পরিস্থিতিতে, ফন্ডেশন বেয়েলার-এর এই উদ্যোগ পরিবেশ সংরক্ষণে শিল্পকলার গুরুত্বের বিষয়টি তুলে ধরে।
শ্যানেল কালচার ফান্ডের প্রেসিডেন্ট ইয়ানা পিল এক সাক্ষাৎকারে জানান, তাঁদের নিজস্ব কোনো ভৌত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান নেই।
তাই তারা বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে চায়।
এই কারণে তারা স্বল্পমেয়াদী কোনো প্রকল্প বা অনুষ্ঠানের পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদী এবং পরিবর্তন আনয়নকারী কাজে মনোযোগ দেয়, যা শ্যানেল পণ্যের প্রচারের উদ্দেশ্যে নয়।
শ্যানেল কালচার ফান্ড বর্তমানে ১৫টি দেশে প্রায় ৫০টি প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করেছে।
এর মধ্যে চীনের সাংহাইয়ে অবস্থিত পাওয়ার স্টেশন অফ আর্ট-এর তৃতীয় তলার গ্যালারি সংস্কার এবং চীনের প্রথম আধুনিক আর্ট লাইব্রেরি স্থাপন অন্যতম।
এছাড়াও, ব্রাজিলের পিনাকোটেকা ডি সাও পাওলোর সঙ্গে মিলে নারীবাদী শিল্পীদের জন্য একটি বার্ষিক রেসিডেন্সি প্রোগ্রামও তারা শুরু করেছে।
এই ঘটনা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, আমাদের দেশেও পরিবেশ সুরক্ষার গুরুত্ব বাড়ছে।
শহরের কংক্রিটের জঙ্গলে সবুজ স্থানগুলো রক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবং জনসাধারণের জন্য বাগান তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।