অবাক করা! রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিনামূল্যে জাদুঘরে যাওয়ার ব্যবস্থাপত্র!

সুইজারল্যান্ডের একটি শহরে রোগীদের জন্য এক অভিনব স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করা হয়েছে। এখানকার চিকিৎসকেরা এখন রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং শারীরিক চিকিৎসার অংশ হিসেবে বিনামূল্যে জাদুঘর পরিদর্শনের পরামর্শ দিচ্ছেন।

খবর অনুযায়ী, নিউচ্যাটেল শহরে এই পরীক্ষামূলক প্রকল্প শুরু হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এখানকার চিকিৎসকেরা রোগীদের চিকিৎসার অংশ হিসেবে শহরের চারটি জাদুঘরে বিনামূল্যে ঘোরার ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। এই প্রকল্পের মূল ধারণাটি এসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৯ সালের একটি প্রতিবেদন থেকে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শিল্পকর্ম মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে, মানসিক আঘাতের প্রভাব কমাতে এবং বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা ও অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

নিউচ্যাটেলের এই প্রকল্পের জন্য স্থানীয় ও আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ ১০,০০০ সুইস ফ্রাঙ্ক (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ লাখ টাকার সমান) বরাদ্দ করেছেন।

দুই বছর মেয়াদী এই প্রকল্পের সাফল্যের পর থিয়েটার বা নৃত্যের মতো অন্যান্য শিল্পকর্মেও এই ধরনের থেরাপি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

স্থানীয় কাউন্সিল সদস্য জুলি কৌরসিয়ার ডেলাফন্টেইন জানান, কোভিড পরিস্থিতির কারণে সংস্কৃতি কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর যে প্রভাব পড়েছিল, তা বিবেচনা করে এই প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা হয়।

ইতিমধ্যে প্রায় ৫০০ জন রোগীর জন্য এই ধরনের ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়েছে।

মারিয়ান ডি রেইনিয়ার নেভস্কি, যিনি এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত, তিনি জানান, বিষণ্ণতায় আক্রান্ত রোগী, শারীরিক দুর্বলতায় ভোগা মানুষ এবং দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এই ব্যবস্থা খুবই উপযোগী হতে পারে।

এমন রোগীদের জন্য এটি একদিকে যেমন মানসিক শান্তির কারণ হবে, তেমনি জাদুঘরে হেঁটে তাদের শারীরিক ব্যায়ামও হবে।

নিউচ্যাটেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ড. মার্ক-ওলিভিয়ার সৌভাইন জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের আগে রোগীদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে তিনি ইতিমধ্যেই জাদুঘর পরিদর্শনের পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, রোগীদের জন্য ওষুধ বা পরীক্ষার পরিবর্তে জাদুঘরে যাওয়ার ব্যবস্থাপত্র দেওয়াটা অনেক আনন্দের।

এই অভিনব উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে।

স্থানীয় এক বাসিন্দা কার্লা ফ্রাগনিয়ার ফিলিগার বলেন, “আমি মনে করি এটা দারুণ একটা আইডিয়া।

পৃথিবীর সব জাদুঘরের জন্যই এমন ব্যবস্থাপত্র চালু করা উচিত।”

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *