যুক্তরাজ্যের একটি ঐতিহাসিক স্থান, যা “সীকামোর গ্যাপ” নামে পরিচিত, সেখানকার একটি বিখ্যাত গাছ কেটে ফেলার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। গাছটি শুধু একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই ছিল না, বরং এটি ব্রিটেনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ ছিল এবং ১৯৯১ সালের “রবিন হুড: প্রিন্স অফ থিভস” চলচ্চিত্রে এর উপস্থিতি ছিল।
এই ঘটনার পর সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় ওঠে, যা প্রমাণ করে মানুষের কাছে এর গুরুত্ব কতখানি।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে, উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে, এই গাছটি কেটে ফেলা হয়। এর ফলে হ্যারিয়ান’স ওয়ালেরও ক্ষতি হয়, যা ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত।
এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে ড্যানিয়েল গ্রাহাম (৩৯) এবং অ্যাডাম কারুথার্সকে (৩২)। সম্প্রতি নিউক্যাসল ক্রাউন কোর্টের একটি জুরি তাদের দুজনকে অপরাধমূলক ক্ষতি সাধনের দুটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, কারুথার্স এবং গ্রাহাম, কার্লাইল থেকে নর্দাম্বারল্যান্ডে এসে একটি চেইনসো ব্যবহার করে গাছটি কাটেন এবং গাছের কিছু অংশ নিয়ে ফিরে যান। সরকারি আইনজীবীর মতে, এটি ছিল একটি “বিবেকহীন কাজ।”
ঘটনার পর অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নিয়ে হাসাহাসি করে এবং তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করেনি।
আদালতে বিচার চলাকালে গ্রাহামের ফোনের একটি ভিডিও উপস্থাপন করা হয়, যেখানে গাছটি কাটার দৃশ্য দেখা যায়। এই ভিডিওটি পরে কারুথার্সের কাছে পাঠানো হয়েছিল।
সরকারি কৌঁসুলিরা জানান, কে গাছটি কেটেছিল তা স্পষ্ট না হলেও, ভিডিওতে যাদের দেখা গেছে তারাই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল।
অভিযুক্তদের সম্ভাব্য শাস্তির বিষয়ে জানা গেছে, তাদের ১৫ই জুলাই তারিখে সাজা ঘোষণা করা হবে। অপরাধের গুরুত্বের কারণে তাদের দীর্ঘ কারাদণ্ড হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী, এই ধরনের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। গাছটির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮ লক্ষ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ছিল, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯ কোটি টাকার বেশি।
এছাড়াও, হ্যারিয়ান’স ওয়ালের ক্ষতির জন্য আরও প্রায় ১,৫০,০০০ টাকা খরচ হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে, অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কেন কেউ এমন একটি সুন্দর এবং ঐতিহাসিক স্থান ধ্বংস করতে পারে?
সরকারি আইনজীবী রিচার্ড রাইট কেসি এই ঘটনাকে “মূর্খদের কাজ” হিসেবে অভিহিত করেছেন। নর্দাম্বিয়া পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা তাদের এই কাজের কোনো উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারেনি।
তথ্য সূত্র: পিপল