সিরিয়ায় প্রতিশোধের আগুনে আলাউয়িদের বুকফাটা আর্তনাদ! কারো উপরই কি নেই বিশ্বাস?

**সিরিয়ার নতুন সরকারের উপর আস্থা হারাচ্ছে আলাউয়িরা?**

সিরিয়ার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশটির সংখ্যালঘু আলাউয়ি সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বাশার আল-আসাদের পতনের পর তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, যা সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় আরও বেড়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, নতুন সরকারের প্রতি তাদের আস্থা এখন প্রায় ভেঙে গেছে।

২০১১ সালে সিরিয়ায় সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু হলে বাশার আল-আসাদ সরকার কঠোর হস্তে তা দমন করে। এর ফলস্বরূপ, দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় সশস্ত্র সংঘাত।

আসাদ সরকার সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে আলাউয়িদের, নিজেদের পাশে পেতে চেষ্টা করে এবং বিদ্রোহীদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে। এর ফলস্বরূপ, অনেক আলাউয়ি মনে করতে শুরু করে যে আসাদ সরকারের পতন হলে তাদের উপর প্রতিশোধ নেওয়া হতে পারে।

ডিসেম্বর মাসে আসাদ সরকারের পতনের পর নতুন সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু মার্চ মাসের শুরুতে সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় বহু মানুষ নিহত হয়, যাদের মধ্যে আলাউয়ি সম্প্রদায়ের সদস্যরাও ছিলেন।

ঘটনার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজনদের অভিযোগ, নতুন সরকার তাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের ধারণা, হয়তো সরকার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, অথবা তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে, অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ সংস্থা আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে কিছু ছিল যারা আগে আসাদ সরকারের প্রতি অনুগত ছিল। আবার কিছু গোষ্ঠী নতুন সরকারের সঙ্গে যুক্ত হলেও তাদের কার্যক্রম এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।

এসব গোষ্ঠীর প্রতিশোধমূলক হামলায় সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

সিরিয়ার নতুন সরকার যদিও ঘটনার তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করেছে এবং সংখ্যালঘুদের আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করছে, তবে পরিস্থিতি এখনো কঠিন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের জন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনা এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শুধু সামরিক খাতে অর্থ বিনিয়োগ না করে দেশের উৎপাদনশীল খাতে, যেমন কৃষি ও শিল্পে বিনিয়োগ করা উচিত। একইসঙ্গে, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা এবং আলাউয়ি সম্প্রদায়কে সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *