সিরিয়ার সোয়েদা শহরে সম্প্রতি ড্রুজ মিলিশিয়া এবং বেদুঈন যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে সেখানকার পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে, সিরিয়ার সরকার শহরটি থেকে বেদুঈন পরিবারগুলোকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (IOM) এর মতে, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘর্ষে প্রায় ১ লক্ষ ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, উভয় পক্ষের মধ্যে প্রতিশোধমূলক হামলা এবং অপহরণের ঘটনার পরেই এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়। ড্রুজ সম্প্রদায়ের মিলিশিয়ারা এবং বেদুঈন যোদ্ধাদের মধ্যেকার এই লড়াইয়ে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং সিরিয়ার যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
শুধু তাই নয়, এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলও ড্রুজ অধ্যুষিত সোয়েদা প্রদেশে বিমান হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আহমেদ আল-দালাতি সরকারি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, “আমরা সোয়েদার আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি, যাতে সেখানে শান্তি বজায় থাকে এবং লড়াই বন্ধ করা যায়। এর ফলে, শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে।”
সোমবার সকালে, বেদুঈন পরিবারগুলোকে বহনকারী বাসগুলোর সঙ্গে সিরিয়ান আরব রেড ক্রিসেন্ট-এর অ্যাম্বুলেন্স এবং অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহকারী গাড়ি দেখা যায়। অনেক পরিবারকে তাদের জিনিসপত্রসহ ট্রাকে করে শহর ত্যাগ করতে দেখা গেছে।
সরকার কর্তৃক উদ্বাস্তু সরানোর এই পদক্ষেপ কীভাবে বৃহত্তর শান্তি আলোচনার সঙ্গে সম্পর্কিত, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য এখনো জানানো হয়নি। এর আগে, শনিবার উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দী বিনিময়ের বিষয়ে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছিল।
ব্রিটিশ ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সমঝোতার অংশ হিসেবে বেদুঈন যোদ্ধাদের তাদের হেফাজতে থাকা ড্রুজ নারীদের মুক্তি দিতে এবং প্রদেশ ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। যদিও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সিরিয়ায় কোনো হামলার কথা অস্বীকার করেছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শারা ড্রুজ সম্প্রদায়ের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং সংঘর্ষে জড়িত দলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সিরিয়ার ড্রুজ সম্প্রদায়ের মানুষেরা একসময় বাশার আল-আসাদের শাসনের অবসানকে স্বাগত জানিয়েছিল। বর্তমানে, তাঁরা আল-শারা সরকারের প্রতি কিছুটা সন্দিহান। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে ড্রুজ সম্প্রদায়ের ওপর বেশ কিছু হামলা হয়েছে এবং তাদের ধর্মীয় নেতাদের ছবিও বিকৃত করা হয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস