মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে, এমন খবরে দেশটির নাগরিকদের মধ্যে আনন্দের ঢেউ লেগেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (বর্তমানে এই সিদ্ধান্ত বহাল আছে কিনা, তা যাচাই করতে হবে) এক ভাষণে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান, যা সিরিয়ার দীর্ঘদিনের যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে এবং এটিকে ‘সিরীয় জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়’ হিসেবে অভিহিত করেছে। মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সিরিয়ার স্থিতিশীলতা, আত্মনির্ভরশীলতা এবং জাতীয় পুনর্গঠনের পথে গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ তৈরি করবে।’
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার উপর বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটি আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। নিষেধাজ্ঞাগুলো সিরিয়ার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে একটি বড় বাধা হিসেবে দেখা যাচ্ছিল।
দামেস্কের উমাইয়া স্কোয়ারে বহু মানুষ একত্রিত হয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। তারা গান বাজিয়ে এবং গাড়ি নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে সিরিয়ার পতাকা উত্তোলন করেন। ৩৩ বছর বয়সী ইংরেজি শিক্ষক হুদা কাসসার বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত। এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই পুরো দেশের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। নির্মাণকাজ আবার শুরু হবে, বাস্তুচ্যুত মানুষজন ফিরতে পারবে এবং জিনিসপত্রের দাম কমবে।’
উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ইদলিবে ৩৯ বছর বয়সী বাসসাম আল-আহমেদ জানান, তিনি এই খবরে অত্যন্ত খুশি। তিনি বলেন, ‘১৪ বছর ধরে চলা যুদ্ধ এবং ৫০ বছর ধরে আসাদ সরকারের শাসনের পর, সিরিয়ার জনগণের স্থিতিশীল ও নিরাপদ জীবন পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)-এর নেতা মাজলুম আবদিও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই পদক্ষেপ স্থিতিশীলতা ও পুনর্গঠনে সহায়তা করবে এবং সকল সিরীয় নাগরিকের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এই সিদ্ধান্তের ফলে সিরিয়ার অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা