সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে অবস্থিত একটি গ্রিক অর্থোডক্স গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন। রবিবার প্রার্থনা চলার সময় এই ঘটনা ঘটে, যেখানে আরও ৬৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) সূত্রে এই খবর জানা গেছে।
সংবাদ সংস্থা এপি’র খবরে বলা হয়েছে, দামেস্কের বাইরে দাউইলা এলাকার মার ইলিয়াস গির্জায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম সানা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে হতাহতের এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।
তবে, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (Syrian Observatory for Human Rights) জানিয়েছে, হামলায় ১৯ জন নিহত হয়েছে এবং বহু লোক আহত হয়েছে। হামলার কারণ এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারী প্রথমে গির্জায় প্রবেশ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। এরপর আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
বিস্ফোরণের তীব্রতায় গির্জার ভেতরের আসবাবপত্র ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ঘটনার সময় গির্জায় প্রায় সাড়ে তিনশ’ জন উপাসক প্রার্থনা করছিলেন। ফাদার ফাদি ঘাত্তাস নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি অন্তত ২০ জনকে নিহত হতে দেখেছেন।
এই ঘটনার পর সিরিয়ার সরকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের প্রাথমিক তদন্তে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের জড়িত থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তদন্ত চলছে এবং দোষীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সিরিয়ার তথ্যমন্ত্রী হামজা মোস্তাফা এই হামলাকে কাপুরুষোচিত আখ্যা দিয়ে বলেন, “এই ধরনের ঘটনা আমাদের ঐক্যবদ্ধ মূল্যবোধের পরিপন্থী। আমরা সকল নাগরিকের সমান অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সমাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
সিরিয়ার খ্রিস্টান ও নারী বিষয়ক মন্ত্রী হিন্দ কাবাওয়াত নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে গির্জায় যান। তিনি বলেন, “ঈশ্বর সবার প্রার্থনা শুনছিলেন, কিন্তু এমন নৃশংসতা মেনে নেওয়া যায় না।”
উল্লেখ্য, সিরিয়ায় বর্তমানে গৃহযুদ্ধ চলছে এবং বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, সংখ্যালঘুদের উপর এমন হামলা গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস