সিরিয়ায় আবারও জাতিগত সংঘাত, নিহতের সংখ্যা বাড়ছে
সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে সম্প্রতি সরকারপন্থী মিলিশিয়া এবং সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে প্রায় ১০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে কয়েক দশক ধরে চলা স্বৈরশাসনের অবসানের পর সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে এই সংঘর্ষ সবচেয়ে বেশি হয়েছে। বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে। আসাদ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়া শাসন করেছে। তাদের শাসনের অবসানের পর সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এই সংঘাতের মূল কারণ হলো, সিরিয়ার নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ইসলামপন্থী দলগুলোর উত্থান সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করেছে। নতুন সরকারে সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্বের অভাবও তাদের উদ্বেগের কারণ।
দ্রুজ সম্প্রদায় একাদশ শতকে শিয়া ইসলামের একটি শাখা থেকে উদ্ভূত হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১০ লাখ দ্রুজ সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে অর্ধেকের বেশি সিরিয়ায় বসবাস করে। এছাড়াও লেবানন, ইসরায়েল এবং গোলান মালভূমিতেও তাদের বসবাস রয়েছে। সিরিয়ায় তারা প্রধানত সোয়েদা প্রদেশে এবং দামেস্কের কিছু অংশে বসবাস করে।
সংঘাতের সূত্রপাত হয় একটি অডিও ক্লিপকে কেন্দ্র করে, যেখানে ইসলাম ধর্মের নবীর সমালোচনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ক্লিপটি একজন দ্রুজ ধর্মগুরুর বলে ধারণা করা হলেও, তিনি তা অস্বীকার করেন। এই ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সরকারপন্থী মিলিশিয়া ও দ্রুজ সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ইসরায়েলও এই পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সিরিয়ার এই পরিস্থিতি দেশটির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার অভাব এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দীর্ঘমেয়াদে দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিঘ্নিত করতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।