সিরিয়ায় আল-আলাউয়েতদের হত্যা: তদন্তের সময়সীমা বাড়ালো সরকার!

সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে আলাউয়ীদের হত্যাকাণ্ডের তদন্তের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা’র সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

মার্চ মাসের শুরুতে, সরকারি বাহিনী এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পর এই হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটে। এর ফলস্বরূপ, প্রতিশোধমূলক হামলায় এক হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যাদের অধিকাংশই আলাউয়ী সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন।

আলাউয়ীরা সিরিয়ার একটি সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়, যাদের সঙ্গে বাশার আল-আসাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। বিদ্রোহীরা অভিযোগ করে আসছিল যে, আসাদ সরকারের প্রতি অনুগত আলাউয়ীরা তাদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে।

প্রতিশোধস্বরূপ, তারা উপকূলীয় এলাকাগুলোতে হামলা চালায়, যেখানে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয় এবং নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়।

ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রেসিডেন্ট আল-শারা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন এবং তাদের ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তদন্তকারীরা সময় চেয়ে আবেদন করলে, তাদের আরও তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে।

তদন্ত কমিটির মুখপাত্র ইয়াসির ফারহান জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের স্থানগুলো চিহ্নিত করতে এবং প্রমাণ সংগ্রহ করতে তাদের আরও বেশি সময় প্রয়োজন। তারা ৪১টি স্থানে হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন, যেগুলোর প্রত্যেকটি আলাদা মামলার ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বানিয়াস শহরে নিহত ১০০ জনের মধ্যে অন্তত ৩২ জনকে সাম্প্রদায়িক কারণে হত্যা করা হয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তদন্ত কমিটির সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে, তবে তাদের স্বাধীনতা, পর্যাপ্ত সম্পদ এবং ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলোতে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সিরিয়া এবং অন্যান্য দেশের কট্টরপন্থী সুন্নি মুসলিম এবং জিহাদি যোদ্ধাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। স্থানীয় সুন্নি সম্প্রদায়ের কিছু সদস্যও প্রতিশোধের অংশ হিসেবে এই হামলায় অংশ নেয়।

তারা আলাউয়ী সম্প্রদায়ের ওপর আসাদ সরকারের নৃশংসতার জন্য তাদের দায়ী করে। এই পরিস্থিতিতে, সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক বিভাজন আরও গভীর হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: এ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *