সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে দাবানল, ধ্বংস হয়েছে কয়েক হাজার হেক্টর বনভূমি।
সিরিয়ার উপকূলীয় পার্বত্য অঞ্চল জাবাল তুর্কমানে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে চলা এই আগুনে পুড়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর বনভূমি, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
দেশটির নতুন সরকার যখন এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে, ঠিক তখনই এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে। তীব্র বাতাস, দুর্গম ভূমি এবং যুদ্ধের সময় পুঁতে রাখা মাইন–এর কারণে আগুন নেভানোর কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
লাটাকিয়া প্রদেশের সিভিল ডিফেন্সের প্রধান আবদেল কাফি কায়্যাল জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দমকলকর্মীদের আনা হয়েছে।
আগুনের কারণে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে এবং অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
তুরস্ক এরই মধ্যে দুটি হেলিকপ্টার ও ১১টি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি পাঠিয়েছে এবং জর্ডানও আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করতে সীমান্ত অতিক্রম করেছে।
নাসার (NASA) স্যাটেলাইট ডেটা অনুযায়ী, আগুনে পুড়ে যাওয়া এলাকার পরিমাণ ১৮০ বর্গ কিলোমিটারের বেশি, যা রাজধানী দামেস্কের চেয়েও বড়।
সিরিয়ার সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দেশটির বনাঞ্চল প্রায় ৫,২৭০ বর্গ কিলোমিটার। এর মানে হলো, মাত্র তিন দিনের আগুনে দেশের মোট বনভূমির ৩ শতাংশের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে চলা খরা পরিস্থিতিও এই দাবানলকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।
দেশটির ইউফ্রেটিস বেসিন অঞ্চলে গত চার বছর ধরে বৃষ্টিপাত কম হয়েছে এবং তাপমাত্রা ছিল অস্বাভাবিকভাবে বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন বিপর্যয় আরও বাড়তে পারে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিরিয়ার সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সাহায্য চেয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন