তানজানিয়ার বিরোধী দলের নেতা টুন্ডু লিসুকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বুধবার এক জনসভায় বক্তৃতাকালে তিনি নির্বাচন সংস্কারের দাবি জানানোর পরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। লিসু চাদেমা পার্টির চেয়ারম্যান এবং আসন্ন অক্টোবর মাসের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার প্রচেষ্টার ওপর এটি প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
খবর অনুযায়ী, বুধবার মবিঙ্গা শহরে একটি জনসভা শেষে পুলিশ লিসুকে আটক করে। আটকের আগে তিনি পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানান।
বৃহস্পতিবার দার-এস-সালামের একটি আদালতে হাজির করা হলে লিসুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়। তবে, তিনি মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অন্য একটি অভিযোগের বিরুদ্ধে দোষ স্বীকার করেননি। আগামী ২৪শে এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
লিসুর আইনজীবী রুগেমেলেজা নশালা এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন। তিনি রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এই অভিযোগগুলোকে রাজনীতি থেকে আলাদা করা যায় না।
লিসু চাদেমা দলের সমর্থকদের মধ্যে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন, কিন্তু সরকার এটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করছে।
অভিযোগনামা অনুসারে, লিসু গত ৩রা এপ্রিল দার-এস-সালামে দেওয়া এক ভাষণে নির্বাচনের বিরোধিতা করার কথা বলেছিলেন। এতে বলা হয়েছে, “আমরা নির্বাচন প্রতিহত করব।
আমরা বিদ্রোহের জন্ম দেবো। পরিবর্তনের এটাই পথ।” ২০১৬ সালে এক হত্যাচেষ্টায় লিসুকে ১৬ বার গুলি করা হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট হাসান ক্ষমতা গ্রহণের পর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর নিপীড়ন এবং গণমাধ্যমের ওপর সেন্সরশিপ কিছুটা শিথিল করেছিলেন। তবে, মানবাধিকার কর্মীরা বিভিন্ন সময় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, গুম ও হত্যার অভিযোগ তুলেছেন।
যদিও প্রেসিডেন্ট হাসান মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার অঙ্গীকার করেছেন এবং গত বছর গুমের অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বর্তমানে তানজানিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে। বিরোধী দলের ওপর সরকারের এমন কঠোর মনোভাব গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগজনক।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা