মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ খুচরা বিক্রেতা ‘টার্গেট’-এর ব্যবসা এখন বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির বিক্রি কমেছে এবং তাদের মুনাফা অর্জনের পথেও দেখা দিয়েছে নানা সংকট।
এর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তাদের কিছু নীতিগত পরিবর্তনের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অসন্তোষ এবং সম্ভাব্য শুল্ক বৃদ্ধির আশঙ্কা।
**বিক্রয়ে পতন ও শেয়ারের দরপতন**
গত প্রান্তিকে, অর্থাৎ শেষ তিন মাসে, ‘টার্গেট’-এর বিক্রি আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩.৮ শতাংশ কমেছে। এর প্রধান কারণ, দোকানে আসা গ্রাহকের সংখ্যা হ্রাস এবং কেনাকাটার পরিমাণ কমে যাওয়া।
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, কোম্পানিটি তাদের আর্থিক পূর্বাভাসও কমিয়ে দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চলতি বছরে তাদের বিক্রি সামান্য কমতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, বিনিয়োগকারীরাও হতাশ। বুধবার শেয়ার বাজারে ‘টার্গেট’-এর শেয়ারের দাম ৪ শতাংশ কমে যায়।
গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারের দর প্রায় ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ‘টার্গেট’-এর সমস্যাগুলো সহজে মিটবে না।
**নীতি পরিবর্তনের প্রভাব**
আসলে, ‘টার্গেট’-এর এই খারাপ পরিস্থিতির পেছনে রয়েছে তাদের কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিশেষ করে, কর্মীদের মধ্যে বৈচিত্র্য, সমতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ (Diversity, Equity, and Inclusion বা DEI) বিষয়ক কিছু কর্মসূচি তারা পরিবর্তন করে।
এই পরিবর্তনের ফলে অনেক গ্রাহক অসন্তুষ্ট হয়েছেন। অনেক গ্রাহক সামাজিক মাধ্যমে এর বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং অনেকে ‘টার্গেট’-এর পণ্য বয়কট করার ডাক দিয়েছেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে, ‘টার্গেট’ এমন কিছু গ্রাহকদের বিরাগভাজন হয়েছে, যারা তাদের প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্র্যান্ড হিসেবে বিবেচনা করত। জানা যায়, এই পরিবর্তনের প্রতিবাদে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সুপরিচিত ধর্মগুরুরাও সোচ্চার হয়েছিলেন।
**ভবিষ্যতের উদ্বেগ**
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের কারণেও ‘টার্গেট’-এর ব্যবসায়িক খরচ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কারণ, ‘টার্গেট’ তাদের অনেক পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করে। শুল্ক বাড়লে, তাদের পণ্যের দামও বাড়বে, যা গ্রাহকদের ওপর প্রভাব ফেলবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ‘টার্গেট’-এর এই সংকট দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। তাদের ব্যবসার উন্নতির জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন