বিয়ে শাদির খরচ বাড়ছে, দায়ী কি যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্ক?
বিয়ে একটি আনন্দময় অনুষ্ঠান, যা প্রতিটি মানুষের জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকে। তবে বিয়ের আয়োজন এখন শুধু আনন্দের বিষয় নয়, বরং একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়াও বটে।
আর এই খরচের উপর প্রভাব ফেলছে বিভিন্ন দেশের আমদানি শুল্ক। সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধি করেছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে বিয়ের বাজারের উপর।
এই শুল্ক বৃদ্ধির কারণে বিয়ের বিভিন্ন উপকরণ ও সামগ্রীর দাম বাড়ছে, ফলে অনেক যুগল তাদের বিয়ের পরিকল্পনা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বিয়ের পোশাক, ফুলের তোড়া, কেক তৈরির উপকরণ, বিয়ের কার্ড ও অন্যান্য সাজসজ্জার সামগ্রীর দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। কনেদের জন্য স্প্যানিশ গাউন কিনতে অতিরিক্ত প্রায় ৩০০ ডলার খরচ করতে হচ্ছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩১ হাজার ৫০০ টাকার সমান (১ ডলার = ১০৫ টাকা ধরে)।
শুধু পোশাক নয়, ফুলের দামও বেড়েছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে আসা ফুলের উপরও শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার একজন কনে জানিয়েছেন, বিয়ের মেনু কার্ড ও অন্যান্য কাগজের সামগ্রীর দাম ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, অনেক ভেন্ডর বা সরবরাহকারী তাদের ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। যুক্তরাষ্ট্রের একটি কেক প্রস্তুতকারক জানান, চকলেটের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাঁর ব্যবসার খরচ বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।
এছাড়া, বিয়ের পোশাক প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতারাও পড়েছেন বিপাকে। কারণ, বিয়ের পোশাক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাপড়, বোতাম, জিপারসহ অন্যান্য উপকরণ চীন এবং অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
শুল্ক বৃদ্ধির কারণে তাঁদের আমদানি খরচ বেড়েছে, যা তাঁরা শেষ পর্যন্ত ক্রেতাদের উপর চাপাতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিয়ের বাজারের উপর শুল্কের প্রভাব বেশ সুদূরপ্রসারী হতে পারে। একদিকে, অনেক যুগল হয়তো তাদের বিয়ের পরিকল্পনা স্থগিত করতে পারেন অথবা বাজেট কমাতে বাধ্য হবেন।
অন্যদিকে, ভেন্ডরদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খেতে হবে। বিয়ের পরিকল্পনা বিষয়ক পরামর্শদাতা সংস্থাগুলিও এখন এই অনিশ্চয়তার সম্মুখীন।
তাদের মতে, সিদ্ধান্তের জন্য এখন আগের চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগছে, কারণ ক্রেতারা এখন সবচেয়ে কম দামে সবকিছু পেতে চাইছেন।
যদিও এই প্রতিবেদনটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের বিয়ের বাজারের উপর ভিত্তি করে লেখা, তবে বিশ্বায়নের যুগে আমদানি শুল্কের প্রভাব যে কোনো দেশের বাজারের উপর পড়তে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশেও যদি বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো সামগ্রী বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়, তবে শুল্ক বৃদ্ধির কারণে তার দাম বাড়তে পারে।
এক্ষেত্রে, ক্রেতাদের সচেতন হওয়া এবং বাজেট অনুযায়ী পরিকল্পনা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস