ভয়ঙ্কর দুঃসংবাদ! আমদানি শুল্কের কারণে এখনই বাড়ছে খাদ্যপণ্যের দাম!

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির কারণে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে, যা বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয়।

যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, কারণ দেশটির সরকার বিভিন্ন দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছে। এই শুল্কের কারণে সেখানকার বাজারে আমদানি করা খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়তে পারে, যা ভোক্তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ। এই ঘটনা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হতে পারে, বিশেষ করে আমদানি-রপ্তানি এবং শুল্ক নীতি-সংক্রান্ত বিষয়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতি অনুযায়ী, কফি, সামুদ্রিক খাবার, ফল এবং আরও অনেক খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে। খাদ্য প্রস্তুতকারক এবং বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্কের কারণে সুপারমার্কেটগুলোতে খাদ্যপণ্যের দাম কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বাড়তে শুরু করবে এবং আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তা আরও স্পষ্ট হবে। উদাহরণস্বরূপ, যারা ফল আমদানি করে, তাদের ক্ষেত্রে শুল্কের কারণে খরচ বাড়বে, যা সরাসরি ভোক্তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শুল্কের কারণে খাদ্যপণ্যের দাম গড়ে ২.৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। কিছু পণ্যের দাম আরও বেশি বাড়তে পারে, যেমন তাজা ফল ও সবজির দাম ৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে স্বল্প আয়ের মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, কারণ তাদের আয়ের একটি বড় অংশ খাবারের পেছনে খরচ হয়।

ছোটখাটো মুদি দোকানগুলো, যাদের বড় বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতার ক্ষমতা কম, তাদের ওপর এই শুল্কের প্রভাব দ্রুত পড়বে। বড় কোম্পানিগুলো হয়তো এই খরচ কিছুটা হলেও কমাতে পারবে, কিন্তু ছোট উৎপাদকদের পক্ষে সেটা কঠিন হবে। উদাহরণস্বরূপ, ইতালির একজন জলপাই তেল ও ভিনেগার সরবরাহকারী তাদের পণ্যের দাম ২০ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, যা ছোট দোকানগুলোর জন্য বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করবে।

যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির পেছনে আরও একটি কারণ হলো বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলের জটিলতা। অনেক খাদ্যপণ্য, যা স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা সম্ভব নয়, সেগুলোর দাম বাড়তে পারে। দেশটির খাদ্য ও পানীয়ের প্রায় ১৭ শতাংশ আমদানি করা হয়। এর মধ্যে কফি, সামুদ্রিক খাবার এবং ফলের মতো প্রয়োজনীয় জিনিস উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আমদানি করা হয়।

তবে, এই পরিস্থিতিতে মেক্সিকো ও কানাডার মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কৃষি পণ্য সরবরাহকারীদের শুল্কের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এর ফলে খাদ্যপণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল থাকতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যে খাদ্যপণ্যের দাম অনেক বেড়েছে, যা ভোক্তাদের মধ্যে অসন্তুষ্টি তৈরি করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অনেক ক্রেতা তাদের কেনাকাটার পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছেন এবং সস্তা বিকল্পের দিকে ঝুঁকছেন। এই পরিস্থিতিতে নতুন শুল্ক আরোপের ফলে খাদ্যপণ্যের দাম আরও বাড়লে, ভোক্তাদের ওপর চাপ আরও বাড়বে।

বাংলাদেশের জন্য এই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। আমাদের দেশের আমদানি-নির্ভরতা এবং শুল্ক নীতি পর্যালোচনা করে, খাদ্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা এবং বাণিজ্য নীতির পরিবর্তনের কারণে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেলে দেশের দরিদ্র ও নিম্ন-আয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, যা বিবেচনা করে সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *