তরুণদের নিয়ে সমাজের এমন ধারণা! বাস্তবতা জানলে চমকে উঠবেন

তরুণ প্রজন্মের মনোজগতে ‘অ্যাডোলেসেন্স’ নামের একটি টেলিভিশন ধারাবাহিক, যা তরুণ প্রজন্মের মনোজগতের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছে, বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব, অনলাইনে হয়রানি, লিঙ্গ বৈষম্য, এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় এই ধারাবাহিকের মূল বিষয়বস্তু।

সম্প্রতি, এই ধারাবাহিকটি নিয়ে বিভিন্ন বয়সী তরুণ-তরুণীদের মতামত জানা গেছে। তাঁদের কথায় উঠে এসেছে বর্তমান সমাজের প্রতিচ্ছবি, যা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

ধারাবাহিকটি তরুণদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকের মতে, ‘অ্যাডোলেসেন্স’-এর গল্প বলার ধরন অত্যন্ত বাস্তবসম্মত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার, সাইবার বুলিংয়ের শিকার হওয়া, এবং এর ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি—এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে অনেকে তাঁদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। কেউ কেউ মনে করেন, এই ধারাবাহিক অভিভাবকদের জন্য একটি সতর্কবার্তা, যা তাঁদের সন্তানদের অনলাইন জগৎ সম্পর্কে আরও সচেতন করবে।

তবে, সবার প্রতিক্রিয়া একরকম ছিল না। কেউ কেউ ধারাবাহিকের কিছু বিষয় নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন।

তাঁদের মতে, ধারাবাহিকে কিছু ঘটনার উপস্থাপনা বাস্তবতার থেকে দূরে ছিল। বিশেষ করে, ইমোজি ব্যবহারের বিষয়টি অনেকের কাছে ত্রুটিপূর্ণ মনে হয়েছে।

এই ধারাবাহিকের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, এটি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা এবং ইনসেল সংস্কৃতির (যেখানে পুরুষরা নারীদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে) প্রভাব তুলে ধরেছে।

অনেক দর্শক মনে করেন, সমাজে তরুণ পুরুষদের ছোট করে দেখা হয়, যা তাঁদের মধ্যে এক ধরনের পরিচয় সংকট তৈরি করে। এর ফলস্বরূপ, তাঁরা চরমপন্থী ধারণার প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে।

অন্যদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নেতিবাচক প্রভাব নিয়েও অনেকে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।

অল্প বয়সে স্মার্টফোন ও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে তাঁরা বিশেষভাবে সচেতন। তাঁদের মতে, কিশোর বয়সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করলে বুলিংয়ের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, যা মানসিক স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।

বাংলাদেশেও তরুণ প্রজন্ম বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে অনেক তরুণ-তরুণী মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যায় ভুগছেন।

সাইবার বুলিং, অনলাইনে হয়রানি, এবং মিথ্যা তথ্যের বিস্তার তাঁদের জীবনকে কঠিন করে তুলেছে। এছাড়া, লিঙ্গ বৈষম্য এবং নারীর প্রতি অবমাননাকর মন্তব্যও তাঁদের উদ্বেগের কারণ।

এই পরিস্থিতিতে, তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে, পরিবার, শিক্ষক এবং সমাজের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

‘অ্যাডোলেসেন্স’ ধারাবাহিকটি তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক সম্পর্ক, এবং বর্তমান সমাজের নানা দিক নিয়ে নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করে।

এই ধরনের আলোচনা আমাদের সমাজে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ ও ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *