২৩ বছর বয়সে ক্যান্সার ধরা পড়ার পর, সিডনি টাউলের জীবন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। সাধারণত, এই বয়সে কারো শরীরে এমন মারাত্মক রোগ দেখা যায় না।
২০১৯ সালে ডার্টমাউথ থেকে স্নাতক শেষ করে, লস অ্যাঞ্জেলেসে এসে যোগা প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন সিডনি। নিয়মিত দৌড়ানো এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অভ্যাস ছিল তার।
কিন্তু ২০২৩ সালের মে মাসে, দৌড়ানোর সময় পেটে একটি ফোলা অনুভব করেন তিনি। প্রথমে বিষয়টা তেমন গুরুত্ব দেননি সিডনি।
ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করে হার্নিয়ার সম্ভবনা আছে বলে ধারণা করেন। এরপর শুরু হয় তার শারীরিক জটিলতা। হালকা কাজ করতেও তার পেটে জ্বালাপোড়া হতে শুরু করে। এমনকি, হাঁটাচলার মতো সাধারণ কাজও কঠিন হয়ে পড়েছিল।
অবশেষে, চিকিৎসকের পরামর্শে আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষার মাধ্যমে তার শরীরে টিউমার ধরা পরে। দ্রুত এমআরআই করার পর জানা যায়, তার লিভার এবং পিত্তনালীতে একাধিক টিউমার রয়েছে, যার মধ্যে একটি বেশ বড়। পরীক্ষার ফলাফলে জানা যায়, তিনি “কোলাঞ্জিওকার্সিনোমা” নামক বিরল ক্যান্সারে আক্রান্ত। সাধারণত, এই ক্যান্সার বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
সিডনির ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পর, অনেকেই তার অসুস্থতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাদের ধারণা ছিল, ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা এমন নাও হতে পারে। কারণ, সিডনির চেহারায় অসুস্থতার কোনো ছাপ ছিল না এবং তার চুলও পড়েনি। তবে, সিডনি এসব সমালোচনাকে পাত্তা না দিয়ে তার লড়াই চালিয়ে যান।
ক্যান্সারের চিকিৎসার অংশ হিসেবে, সিডনি কেমোথেরাপি এবং ইমিউনোথেরাপি শুরু করেন। এরপর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার লিভারের কিছু অংশ এবং পিত্তথলি অপসারণ করা হয়। কিন্তু ক্যান্সারের বিস্তার হওয়ায়, তাকে আবারও কেমোথেরাপি নিতে হয়।
চিকিৎসার পাশাপাশি, সিডনি তার ক্যান্সার-সংক্রান্ত অভিজ্ঞতাগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, বিশেষ করে টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামে নিয়মিত শেয়ার করতে শুরু করেন। তার এই পদক্ষেপ অনেকের মনে সাহস জুগিয়েছে। বর্তমানে টিকটকে প্রায় ৭ লক্ষ ৭০ হাজার এবং ইনস্টাগ্রামে ৬০ হাজারের বেশি অনুসারী রয়েছে তার।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিডনির পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবরা সবসময় তার পাশে ছিলেন। তারা তাকে মানসিক সমর্থন জুগিয়েছেন এবং কঠিন সময়ে সাহস যুগিয়েছেন। বর্তমানে, তিনি নিউ ইয়র্ক সিটিতে চিকিৎসা করাচ্ছেন এবং সুস্থ হওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সিডনি মনে করেন, শারীরিক অসুস্থতা সব সময় বাইরে থেকে দেখা যায় না। তাই, অন্যদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত। তিনি চান, তার এই লড়াই অন্যদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করুক। ভবিষ্যতে তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস ম্যারাথনে দৌড়ানোর স্বপ্ন দেখেন।
তথ্য সূত্র: পিপল