মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর ব্যবস্থাপনায় কিছু পরিবর্তনের ফলে ছোট ব্যবসা এবং ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের হিসাব কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ছে। সম্প্রতি, দেশটির সরকার এমন কিছু নিয়ম শিথিল করেছে, যা তাদের কর আদায়ের পদ্ধতিকে প্রভাবিত করতে পারে।
এই পরিবর্তনগুলো কীভাবে কাজ করছে এবং এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলো কী, তা নিয়েই আজকের আলোচনা।
যুক্তরাষ্ট্রের কর কর্তৃপক্ষের (IRS) কাছে ব্যবসায়িক লেনদেনের হিসাব দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পেমেন্ট অ্যাপ, যেমন – ভেনমোর মাধ্যমে হওয়া লেনদেনের তথ্য জানানোর নিয়ম সহজ করা হয়েছে।
আগে, যদি কোনো ব্যক্তি বছরে ২০০টির বেশি লেনদেন করেন এবং সেই লেনদেনের মোট পরিমাণ ২০,০০০ ডলারের বেশি হয়, তবেই কেবল তাদের তথ্য IRS-কে জানাতে হতো। নতুন নিয়মে, এই সীমা বহাল রাখা হয়েছে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হলো, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ফ্রিল্যান্সার এবং স্বতন্ত্র কর্মীদের (যেমন – পরামর্শদাতা, ক্লিনার, ইত্যাদি) দেওয়া পারিশ্রমিকের হিসাব কীভাবে IRS-কে জানাবে, সেই সংক্রান্ত নিয়ম পরিবর্তন।
আগে, কোনো ব্যবসা যদি কোনো ব্যক্তিকে বছরে ৬০০ ডলারের বেশি পারিশ্রমিক দিত, তবে সেই হিসাব IRS-কে জানাতে হতো। নতুন নিয়মে, এই সীমা বেড়ে ২,০০০ ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং এটি কার্যকর হবে ২০২৫ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের পর থেকে।
এই পরিবর্তনের ফলে ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য হিসাব রক্ষণাবেক্ষণের চাপ কিছুটা কমবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দুটি পরিবর্তনের ফলে ব্যবসার হিসাব রাখা সহজ হবে। তবে এর একটি সম্ভাব্য খারাপ দিক হলো, সরকারের কাছে ফ্রিল্যান্সার ও ছোট ব্যবসায়ীদের আয়ের সম্পূর্ণ হিসাব নাও থাকতে পারে।
এর ফলে কর ফাঁকির সম্ভাবনাও বাড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যারা নিয়মিত বেতন পান, তাদের তুলনায় ফ্রিল্যান্সার বা স্বতন্ত্র কর্মীদের আয়কর ফাঁকি দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিবর্তনগুলো বাংলাদেশের জন্য সরাসরি প্রযোজ্য না হলেও, এটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসার ঘটছে এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ের মতো কাজের সুযোগ বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে, কীভাবে কর ব্যবস্থা তৈরি করা যায়, যা সবার জন্য ন্যায্য হবে এবং রাজস্ব আয় নিশ্চিত করবে, তা নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।
ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের প্রসার ঘটার সঙ্গে সঙ্গে কর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা জরুরি।
এছাড়া, ফ্রিল্যান্সারদের জন্য উপযুক্ত কর কাঠামো তৈরি করা দরকার, যাতে তারা সহজে তাদের আয়ের হিসাব দিতে পারেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন