এখানে মূল লেখার একটি নতুন সংস্করণ নিচে দেওয়া হলো:
**অভিনেতা টায়ে ডিগস: মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতায় বোনের পাশে**
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যায় জর্জরিত আপনজনের পাশে থাকার গুরুত্ব নিয়ে মুখ খুললেন খ্যাতিমান অভিনেতা টায়ে ডিগস। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার ছোট বোন ক্রিশ্চিয়ান ডিগসের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন, যিনি কুড়ি বছর বয়সে সিজোফ্রেনিয়া (schizophrenia) নামক মানসিক রোগে আক্রান্ত হন।
টায়ে ডিগস জানান, “আমার বোন আগের মতোই আছে। শুধু তার প্রতি আরও বেশি সহমর্মী হতে হয় এবং তার প্রয়োজনগুলো বুঝতে চেষ্টা করতে হয়।”
সিজোফ্রেনিয়া একটি জটিল মানসিক রোগ, যা মানুষের চিন্তা, অনুভব এবং আচরণের ওপর প্রভাব ফেলে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা বিভ্রম (hallucinations) ও ভ্রান্ত ধারণা (delusions)-এর শিকার হন। চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগের উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
ডিগস আরও বলেন, যখন তার বোনের রোগ ধরা পরেছিল, তখন তিনি দিশেহারা হয়ে পরেছিলেন। তিনি বলেন, “আমি প্রথমে বুঝতে পারছিলাম না, কীভাবে পরিস্থিতি সামলাবো।” তিনি জানান, সেই সময় বাইরের জগৎ থেকে পাওয়া নানা খবরে তিনি ভীত হয়ে পরেছিলেন।
পরে, ক্রিশ্চিয়ানের চিকিৎসার জন্য নির্ভরযোগ্য একজন থেরাপিস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ডিগস বলেন, “তখন মনে হলো, যেন একটা বোঝা নামল, কারণ আমরা জানতে পারলাম, আসলে কী হয়েছে।”
শুরুর দিকে, সিজোফ্রেনিয়া সম্পর্কে তার ধারণা ছিল খুবই সীমিত। তিনি এর চিকিৎসা এবং এই রোগে আক্রান্তদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত ছিলেন না। পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেন এবং তার বোনের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হন।
বর্তমানে, টায়ে ডিগস এবং ক্রিশ্চিয়ান একটি সচেতনতামূলক প্রচারণায় যুক্ত হয়েছেন। ব্রিস্টল মায়ার্স স্কুইব (Bristol Myers Squibb)-এর সাথে তারা “লাইভ ইয়োর পজসিবল” (“Live Your PosSCZible”) নামে একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন। এই ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দেশ্য হলো, সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের এবং তাদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও সহায়তা প্রদান করা।
সম্প্রতি, তারা “এক্সপ্রেস ইয়োর পজসিবল” (“Express Your PosSCZible”) নামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেন, যেখানে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর সুযোগ পান। ডিগস বলেন, “এটা খুবই আনন্দের যে, তারা একটি কমিউনিটি খুঁজে পেয়েছে, যেখানে তারা একে অপরের সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারে।”
টায়ে ডিগস মনে করেন, সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির ভালো কাজগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং তাদের পাশে থাকাটা জরুরি। তিনি বলেন, “আমি এখন বুঝি, তাদের ছোট ছোট সাফল্যেও আনন্দিত হতে হয়। এমনকি, কোনো খারাপ পরিস্থিতিতেও তাদের পাশে থাকতে হয় এবং তাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসার কথা জানাতে হয়।”
বাংলাদেশেও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা এবং সহায়তা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বর্তমানে, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক যেকোনো সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি বা তাদের পরিবার চাইলে, এইসব সংস্থার সহায়তা নিতে পারেন।
তথ্যসূত্র: পিপল