যুক্তরাষ্ট্রের একজন শিক্ষিকার মানবিক উদ্যোগ, জন্মদিনে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মুখে হাসি।
ছোট্ট শিশুদের জন্মদিন মানেই আনন্দ আর উচ্ছ্বাস। নতুন জামা, খেলনা, কেক—এসবের প্রত্যাশা থাকে তাদের। কিন্তু সবার জীবনে তো আর এমনটা হয় না।
অনেক শিশুই হয়তো জানে না, জন্মদিনটা তাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, ডন টিকারিচ, এই বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন।
ছোটবেলায় নিজের জন্মদিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি জানান, পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে নিজের জন্মদিনটা সবসময় আনন্দের ছিল না।
মিস টি নামে পরিচিত এই শিক্ষিকা, শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের জন্মদিনকে বিশেষভাবে তুলে ধরতে চান। তিনি মনে করেন, প্রতিটি শিশুর কাছেই তাদের জন্মদিনটা বিশেষ কিছু, যা তাদের মনে গেঁথে থাকে।
তাই চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই তিনি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ডন টিকারিচ তাঁর ক্লাসের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য জন্মদিনের উপহারের ঝুড়ি তৈরি করা শুরু করেন।
এই ঝুড়িতে থাকে শিক্ষার্থীর পছন্দসই উপহার, যা তাদের কাছে জন্মদিনের আনন্দ আরও বাড়িয়ে তোলে।
মিস টি-র এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে গভীর মানবিকতা। তিনি উপলব্ধি করেন, অনেক শিশুর পরিবার হয়তো আর্থিক অনটনের কারণে তাদের জন্মদিনের খুশিটুকু পরিপূর্ণভাবে উদযাপন করতে পারে না।
শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তিনি শুধু উপহার দেওয়াই নয়, বরং ক্লাসরুমে একটি ‘আশীর্বাদপূর্ণ আলমারি’ তৈরি করেছেন, যেখানে পোশাক, জুতা, স্বাস্থ্যবিধির সামগ্রী এবং খাবারের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থাকে।
যে কেউ কোনো প্রশ্ন ছাড়াই এই আলমারি থেকে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস নিতে পারে।
ডন টিকারিচের এই মানবিক উদ্যোগ শুধু তাঁর ক্লাসরুমেই সীমাবদ্ধ নেই। তাঁর এই কাজ এখন স্থানীয় অন্যান্য বিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়েছে।
তিনি অনলাইনে তাঁর এই কার্যক্রমের ছবি এবং ভিডিও প্রকাশ করেন। প্রথমে অনেকে তাঁর এই উদ্যোগের সমালোচনা করলেও, এখন অনেকেই তাঁর এই কাজে অনুপ্রাণিত হয়েছেন এবং সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
মিস টি-র মতে, শিশুদের জন্য এই ধরনের সহযোগিতা খুবই জরুরি। কারণ, এতে তারা ভালোবাসার অনুভূতি পায় এবং সমাজের প্রতি তাদের ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।
তিনি মনে করেন, ছোটদের প্রতি সামান্য যত্ন ও সহানুভূতি তাদের জীবনকে সুন্দর করতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল