যুক্তরাষ্ট্রের একজন শিক্ষিকা, কেলেই স্লোন, তাঁর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সৃজনশীল লেখার গুরুত্ব বোঝাতে অভিনব এক পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। তিনি ক্লাসে একটি মজাদার পরীক্ষার মাধ্যমে দেখিয়েছেন, কিভাবে সামান্য বর্ণনাগত ত্রুটি একটি সাধারণ কাজের ফল বদলে দিতে পারে।
তাঁর এই শিক্ষণীয় কৌশল এখন সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
আইডাহোর একটি বিদ্যালয়ে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান কেলেই স্লোন। সম্প্রতি, তিনি তাঁর শিক্ষার্থীদের লেখার খুঁটিনাটি শেখানোর জন্য একটি অভিনব উপায় বেছে নেন।
তিনি ক্লাসে একটি পিনাট বাটার ও জেলি স্যান্ডউইচ তৈরির উদাহরণ দেন। স্লোন তাঁর ছাত্রদের প্রথমে এই স্যান্ডউইচ বানানোর পদ্ধতি লিখতে বলেন। এরপর তিনি সেই নির্দেশগুলি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে শুরু করেন।
শিক্ষার্থীরা যখন জানায়, “পাউরুটি নাও, পিনাট বাটার নাও এবং জেলি নাও,” স্লোন ঠিক সেভাবেই কাজ করেন। তিনি পাউরুটি হাতে নিয়ে, পিনাট বাটার এবং জেলি নিয়ে জানতে চান, “হয়েছে কি?”
ছাত্ররা উত্তর দেয়, “না!” স্লোন তখন তাদের জানান, “তোমরা যা লিখতে বলেছ, আমি তো সেটাই করেছি।” এরপর তিনি আরও কিছু ছাত্রের পরামর্শ অনুসরণ করেন, যেমন পাউরুটির উপরে জেলি এবং বাটার মাখতে বলেন।
কিন্তু, তিনি যখন পাউরুটিটিকে প্লাস্টিকের মোড়কের ভেতরে রেখেই জেলি ও বাটার মাখতে শুরু করেন, তখন ছাত্ররা হেসে অস্থির হয়ে যায়।
বিষয়টি আরও মজাদার করে তোলার জন্য, স্লোন এরপর তাঁর হাতে পিনাট বাটার ও জেলি মাখতে শুরু করেন। ছাত্ররা এতে হৈচৈ শুরু করে এবং বলতে থাকে, “আপনি ভুল করছেন!”
স্লোন তখন জানতে চান, “তাহলে কি আমি কাজটি শেষ করলাম?” এই সময় ক্লাসের সবাই সমস্বরে “না” বলে ওঠে।
এই ঘটনার মাধ্যমে স্লোন তাঁর ছাত্রদের বোঝাতে চেয়েছেন, লেখার সময় বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া কতটা জরুরি। তিনি বলেন, “আমরা ক্লাসে বিস্তারিতভাবে লেখার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছি।
তোমরা কি বুঝতে পারছো কেন বিস্তারিতভাবে লিখতে হয়? কেউ কি প্লেট বা ছুরির কথা উল্লেখ করেছিলে? আমরা কি সেগুলো ব্যবহার করেছি?”
স্লোনের এই শিক্ষাদান পদ্ধতি এতটাই আকর্ষণীয় ছিল যে, এর একটি ভিডিও টিকটকে আপলোড করার পরে তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি ইতিমধ্যে ৫৪.৫ মিলিয়ন বারের বেশি দেখা হয়েছে।
স্লোন জানিয়েছেন, এই মজার পরীক্ষাটি তিনি প্রতি বছর তাঁর শিক্ষার্থীদের পড়ান। তাঁর মতে, “শব্দগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলো সহজেই একটি কথার অর্থ পরিবর্তন করতে পারে। এ কারণেই আমি নির্দেশাবলী অনুসরণ করার ক্ষেত্রে এত সতর্ক ছিলাম।”
শিক্ষিকার এই অভিনব প্রচেষ্টা শুধু তাঁর ক্লাসরুমে নয়, সারা বিশ্বেই সাড়া ফেলেছে। বিস্তারিত এবং নির্ভুলভাবে লেখার গুরুত্ব বোঝানোর এই পদ্ধতি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।
তথ্য সূত্র: পিপল