পিতামাতার বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগে বাড়ি ছাড়লেন এক তরুণ। সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা একটি পোস্টে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণ তার পরিবারের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তার অভিযোগ, ছোট ভাই-বোনদের তুলনায় তাকে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হতে হয়েছে।
অভিভাবকদের ‘অনুশীলনকারী সন্তান’ হিসেবে গণ্য করার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
তরুণের ভাষ্যমতে, শৈশবে বন্ধুদের সাথে খেলার সুযোগ থেকে তিনি ছিলেন বঞ্চিত। অন্যদের যেখানে ৪-৫ বছর বয়সেই বন্ধুদের বাড়ি যাওয়ার অনুমতি ছিল, সেখানে তার ক্ষেত্রে ছিল ভিন্ন নিয়ম।
কারণ জানতে চাইলে, অভিভাবকদের কাছ থেকে তিনি নাকি শুনেছিলেন, “তোমাকে দিয়েই তো আমরা শিখছি, তাই না?”
শুধু বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর ক্ষেত্রেই নয়, খাবারের ক্ষেত্রেও ছিল ভিন্নতা। খাবার টেবিলে, প্লেটের সব খাবার শেষ করার ব্যাপারে তাকে বাধ্য করা হতো, কিন্তু তার ভাই-বোনদের ক্ষেত্রে এমনটা ছিল না।
পড়াশোনার ফলাফলের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যায়।
ভালো ফল না করলে যেখানে তাকে অতিরিক্ত কাজ করতে হতো, সেখানে অন্যদের ক্ষেত্রে তেমনটা হতো না। এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন করলে, অভিভাবকদের একই উত্তর, “তুমি তো আমাদের ‘প্র্যাকটিস রান’ ছিলে।”
তরুণ জানান, জন্মদিন ও অন্যান্য উৎসবে উপহারের ক্ষেত্রেও ছিল ভিন্নতা।
তার ভাষায়, “আমার ভাই-বোনদের তুলনায় উপহারের পরিমাণ ছিল অনেক কম, যা দেখে পরিবারের অন্য সদস্যরাও প্রশ্ন করতেন।”
গ্রীষ্মকালে বন্ধুদের সাথে বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও ছিল কড়াকড়ি। এমনকি, কলেজ সঞ্চয়ের ব্যাপারেও তার বাবা-মা কোনো পদক্ষেপ নেননি, যেখানে তার ভাই-বোনদের জন্য তারা অর্থ জমা করেছিলেন।
অবশেষে, তিনি এই বৈষম্যমূলক আচরণ থেকে মুক্তি পেতে এক বছর ধরে পরিস্থিতি নীরবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং ১৮ বছর বয়সে বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এরপর তিনি তার পরিবারের সদস্যদের পরিবর্তে, দাদা-দাদীর সাথে সময় কাটানো শুরু করেন।
এমনকি, তিনি তার স্নাতক অনুষ্ঠানে বাবা-মাকে আমন্ত্রণ জানাননি।
অভিভাবকদের সাথে কথা বলার সময় তিনি নাকি তাদের সরাসরি জানিয়ে দেন, “আমি আর তোমাদের ‘অনুশীলনকারী সন্তান’ হিসেবে থাকতে চাই না।”
তবে, এই বিষয়ে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই এই তরুণের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, এই তথ্যগুলো ওই তরুণের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তৈরি, যা তিনি সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: পিপল