বন্ধুর চোখে মুখ বাঁকা! ১৮ বছরের তরুণীর স্ট্রোক, তারপর…

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা, আঠারো বছর বয়সী অ্যালেক্সিস “লেক্সি” এডি নামের এক তরুণীর জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা সম্প্রতি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। গত ১০ই মার্চ, ২০২৪ তারিখে, হঠাৎ করেই তিনি অনুভব করেন তার শরীরে কিছু অস্বাভাবিকতা ঘটছে।

বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টার মধ্যে কাটানো একটি সাধারণ দিনের শুরুটা, মুহূর্তেই বদলে যায়।

দিনের শুরুতে, স্কুলে স্বাভাবিক কার্যক্রমের পরে, তিনি একটি নার্সিং হোমে কাজ করতে যান। সেখানেই প্রথম বিপদের আভাস পাওয়া যায়।

একটি কলম খোলার চেষ্টা করার সময়, বাঁ হাত নাড়াচাড়া করতে সমস্যা হচ্ছিল তার। এরপর, তার সারা শরীরে হালকা মাথা ঘোরার মতো একটা অনুভূতি হয় এবং কথা বলতেও অসুবিধা হতে থাকে।

তিনি যখন পানি পান করতে যান, তখনও তা মুখ দিয়ে গড়িয়ে পরে।

ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে যাওয়া লেক্সিকে তার সহকর্মীরা সাহায্য করার চেষ্টা করেন। ততক্ষণে তার বাম হাত সম্পূর্ণ অবশ হয়ে যায়।

এর কিছুক্ষণ পরেই তিনি চেয়ার থেকে পড়ে যান। বন্ধুদের পাঠানো স্ন্যাপচ্যাট ছবিতে তার মুখের বাঁ দিকে বাঁকা হয়ে যাওয়া দেখে, বন্ধুরা তাকে স্ট্রোক হয়েছে কিনা জানতে চায়।

অবস্থা বেগতিক দেখে, লেক্সি তার মাকে ফোন করার সিদ্ধান্ত নেন। মা, মেলিসা এডি, পেশায় একজন অক্যুপেশনাল থেরাপিস্ট।

মেয়ের কথা শুনে তিনি দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান। হাসপাতালে পৌঁছানোর পরে, চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন যে লেক্সির স্ট্রোক হয়েছে।

দ্রুত তাকে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

চিকিৎসকরা জানান, তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা শুরু করা অত্যন্ত জরুরি ছিল। পরীক্ষার পর জানা যায়, লেক্সির হার্টে একটি জন্মগত ত্রুটি ছিল, যার কারণে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে এই স্ট্রোক হয়।

এই সমস্যার কারণে তার “প্যাটেন্ট ফোরামেন ওভাল” (PFO) নামে পরিচিত একটি হৃদরোগ ধরা পরে। চিকিৎসকরা জানান, এই ধরনের সমস্যাগ্রস্ত রোগীদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

চিকিৎসার অংশ হিসেবে, লেক্সিকে ওষুধ দেওয়া হয়, যা তার মস্তিষ্কের জমাট বাঁধা রক্ত ​​সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। চিকিৎসার ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হতে শুরু করেন।

দ্রুত চিকিৎসার কারণে অল্প সময়ের মধ্যে তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেন। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন এবং খুব শীঘ্রই তার হৃদরোগের অস্ত্রোপচার করা হবে।

হাসপাতাল থেকে ফিরে আসার পর, লেক্সি তার বন্ধুদের সঙ্গে প্রমে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি জানান, জীবনের এই কঠিন অভিজ্ঞতা তাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে।

জীবনের গুরুত্ব উপলব্ধি করে, তিনি এখন মানুষের জন্য কিছু করতে চান এবং ভালো একজন মানুষ হিসেবে বাঁচতে চান।

তথ্য সূত্র: পিপলস ম্যাগাজিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *