কুকুরের খাঁচায় বন্দী রেখে কিশোরীকে নির্যাতন: মা ও সৎ বাবার ভয়ঙ্কর কীর্তি!

যুক্তরাষ্ট্রে এক মর্মান্তিক ঘটনায় এক মা ও সৎ বাবাকে তাদের ১৮ বছর বয়সী মেয়েকে বন্দী করে নির্যাতন করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যে ঘটা এই ঘটনায়, নির্যাতিতা মেয়েটি কয়েক বছর ধরে বন্দী ছিল এবং তার উপর শারীরিক ও যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তদের মধ্যে মায়ের নাম ব্রেন্ডা স্পেন্সার (৩৮) এবং সৎ বাবার নাম ব্রান্ডন মোসলে (৪১)। অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৮ সাল থেকে মেয়েটির ওপর এই নির্যাতন শুরু হয়েছিল। ঘটনার শিকার মেয়েটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয় এবং এরপর তাকে বাড়ির ভেতরে বন্দী করে রাখা হয়।

সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার মেয়েটিকে প্রায় এক বছর একটি কুকুরের খাঁচায় বন্দী করে রাখা হয়েছিল। মাঝে মাঝে তাকে খাঁচা থেকে বের করা হতো। এরপর তাকে একটি তালাবদ্ধ বাথরুমে আটকে রাখা হতো, যখন পরিবারের অন্য সদস্যরা আসত, তখন তাকে বাথরুম থেকে বের করা হতো। বাথরুমেই তার জন্য একটি বালতি রাখা হয়েছিল, যা সে শৌচাগারের কাজে ব্যবহার করত। ঘর থেকে পালানোর চেষ্টা করলে স্পেন্সার ও মোসলে যেন টের পান, সেজন্য ঘরে এলার্ম সিস্টেম লাগানো ছিল।

মেয়েটির অভিযোগ, তাকে প্রায়ই বেল্ট দিয়ে পেটানো হতো এবং মোসলে তাকে যৌন নির্যাতন করত। গত ৮ মে, ২০২৫ তারিখে মেয়েটি কোনোমতে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে এবং প্রতিবেশীর সহায়তায় ঘটনাটি প্রকাশ করে। পরে সে পুলিশকে নির্যাতনের বিস্তারিত জানায়।

পুলিশের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই বাড়িতে আরও কিছু পশু ছিল এবং মেয়েটিকে তাদের সঙ্গেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে বাধ্য করা হতো। একইসাথে, জানা গেছে, ১৩ বছর বয়সী আরেকটি মেয়েকেও স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং তাদের দুজনকে বাড়িতে পড়ানো হতো।

১৪ মে, বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যামডেন কাউন্টি প্রসিকিউটর গ্রেসি ম্যাকওলি নিশ্চিত করেন যে, স্পেন্সার মেয়েটির মা এবং মোসলে তার সৎ বাবা। ১১ মে, রবিবার তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে—অপহরণ, গুরুতর হামলা, শিশুর প্রতি অবহেলা এবং যৌন নিপীড়ন। মোসলের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের আরও দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই ঘটনার পর, মোসলেকে তার কর্মস্থল, সাউথইস্টার্ন পেনসিলভানিয়া ট্রান্সপোর্টেশন অথরিটি (SEPTA)-এর রেল প্রকৌশলীর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি ছুটিতে থাকবেন।

গ্লুচেস্টার টাউনশিপের পুলিশ প্রধান ডেভিড হারকিন্স এই ঘটনাকে ‘সবচেয়ে ঘৃণ্য ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে অভিযুক্তরা কারাবন্দী আছেন এবং আগামী ১৬ মে তাদের ডিটেনশন শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *