টেলেগ্রাম-এর প্রতিষ্ঠাতা পাভেল ভুরভ, যিনি তাঁর উদ্ভাবনী কাজের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত, এবার তাঁর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদ বিতরণের এক ব্যতিক্রমী পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। তিনি তাঁর সকল সন্তানের মাঝে এই বিশাল সম্পদ সমানভাবে ভাগ করে দিতে চান, যাদের সংখ্যা একশোর বেশি।
এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ হলো, তিনি চান তাঁর সন্তানদের মধ্যে কোনো বিভেদ সৃষ্টি না হোক এবং তারা সবাই যেন সম্পদের সঠিক মালিকানা পায়।
জানা গেছে, ভুরভের সন্তানরা শুধুমাত্র তাঁর উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ ৩০ বছর পর ব্যবহার করতে পারবে।
এর পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি চাই, আমার সন্তানেরা সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করুক। তারা যেন নিজেদের চেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হতে শেখে এবং কারো ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।”
পাভেল ভুরভের এই সিদ্ধান্তের পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো, তিনি তাঁর কাজের সঙ্গে জড়িত ঝুঁকির কথা বিবেচনা করেছেন। বর্তমানে দুবাইয়ে বসবাস করা ভুরভ জানিয়েছেন, যারা সমাজের ভালো কাজের জন্য চেষ্টা করেন, তাদের অনেক শত্রু তৈরি হয়।
তিনি চান তাঁর সন্তানদের পাশাপাশি তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান, টেলিগ্রামও যেন সুরক্ষিত থাকে।
পেশাগত জীবনে ভুরভ বিভিন্ন সময়ে সমালোচিত হয়েছেন। বিশেষ করে, তাঁর তৈরি করা মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রাম ব্যবহারকারীদের পোস্টের ওপর সীমিত নজরদারির কারণে অনেকে এর সমালোচনা করেছেন।
তাঁদের অভিযোগ, এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে কিছু অসাধু ব্যক্তি মাদক পাচার, অর্থ পাচার এবং শিশু পর্নোগ্রাফির মতো অপরাধমূলক কাজ করে। যদিও ভুরভ এইসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছেন।
বর্তমানে, পাভেল ভুরভের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৩.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় বিশাল একটি অংক।
তবে তিনি নিজে এই ধরনের হিসাবকে ‘আনুমানিক’ বলে মনে করেন। কারণ, তাঁর মতে, তিনি যেহেতু টেলিগ্রাম বিক্রি করছেন না, তাই এই হিসাবের তেমন কোনো গুরুত্ব নেই।
তাঁর মতে, তাঁর মূল সম্পদ আসে ২০১৩ সালে বিটকয়েনে করা বিনিয়োগ থেকে।
তাঁর এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে একটি ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। এর মাধ্যমে তিনি তাঁর সন্তানদের মধ্যে সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিত করতে চাইছেন এবং তাদের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতার বীজ বপন করতে চাইছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন