চীনের ই-কমার্স সাইটগুলোর ওপর শুল্ক বৃদ্ধির জেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রেতাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। স্বল্প মূল্যে পণ্য বিক্রির জন্য পরিচিত Temu এবং Shein-এর মতো সাইটগুলো থেকে কেনাকাটা করা আমেরিকানদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষ করে কম আয়ের মানুষজন পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বিপাকে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেছে, যার ফলস্বরূপ এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে।
এর ফলে, একদিকে যেমন অনেক ক্রেতা এই সাইটগুলো থেকে জিনিস কিনতে পারছেন না, তেমনই অনেকে জিনিসপত্রের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কায় জিনিস মজুত করতে শুরু করেছেন।
ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা, ৬৪ বছর বয়সী রেনা স্কট জানান, তিনি সাধারণত Temu থেকে নিয়মিত কেনাকাটা করেন। আগে একটি আলমারি কিনেছিলেন ৫৬ ডলারে, যা এখন বেড়ে হয়েছে ৮০ ডলারের বেশি।
স্কটের মতো স্বল্প আয়ের অনেক মানুষের কাছেই এই সাইটগুলো ছিল সস্তার বাজার। কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের সমস্যা হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষজন এই প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর বেশি নির্ভরশীল ছিলেন। কারণ পোশাকের মতো প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে তাদের আয়ের একটা বড় অংশ খরচ করতে হতো।
অন্যদিকে, নিউইয়র্কের বাসিন্দা ৫৭ বছর বয়সী ফিলিপ ড্যাম্পিয়ার গত দুই সপ্তাহ ধরে Temu এবং Shein-এর মতো সাইটগুলোতে জিনিসপত্র কিনছেন। তিনি কাগজ, রান্নার সরঞ্জাম, হিটার, আসবাবপত্র থেকে শুরু করে বিছানার চাদর পর্যন্ত সবকিছু কিনছেন।
ড্যাম্পিয়ার জানিয়েছেন, আগামী দুই বছর পর্যন্ত প্রয়োজনীয় জিনিস মজুত করার পরিকল্পনা করছেন তিনি। তার মতে, অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হতে পারে এবং জিনিসপত্রের সংকট দেখা দিতে পারে।
তবে, শুধু দামের কারণে নয়, Temu এবং Shein-এর মতো সাইটগুলোর বিরুদ্ধে পণ্যের গুণগত মান, শ্রমিক অধিকার এবং পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলার অভিযোগও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সাইটগুলো অতিরিক্ত ভোগের সংস্কৃতি তৈরি করে।
অন্যদিকে, অনেকেই মনে করেন, বিদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের এই সিদ্ধান্ত আমেরিকান উৎপাদন ও ব্যবসার জন্য ভালো। কিন্তু ক্রেতারা মনে করেন, এর ফলে তাদের খরচ বাড়বে। ড্যাম্পিয়ার বলেন, শুল্ক আরোপের এই ধারণাটা ‘ভুল’।
তথ্য সূত্র: সিএনএন