টেকিলার বাজারে বড় পরিবর্তন! কেন কমছে বিক্রি?

বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করা টেকিলার বাজারে এখন পরিবর্তনের হাওয়া। কোভিড-১৯ এর সময় পানীয়টির চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়লেও, বর্তমানে সেই জোয়ার কিছুটা কমে এসেছে।

শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত উৎপাদন এবং সম্ভাব্য শুল্কের কারণে এই বাজারের উজ্জ্বল দিনগুলোতে এখন কিছুটা হলেও ভাটা লেগেছে। এই পরিস্থিতিতে, বিশ্ব বাজারের এই প্রবণতা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য কি কোনো বার্তা নিয়ে আসে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টেকিলার বাজার সবচেয়ে বড়। সম্প্রতি, কেন্ডাল জেনারের মালিকানাধীন ‘৮১৮ টেকিলা’ সহ বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ড তাদের বিপণন খাতে অর্থ ব্যয় কমাচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোক্তারা এখন আগের চেয়ে বেশি হিসেবি হচ্ছেন এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ করা থেকে বিরত থাকছেন। এর কারণ হিসেবে বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা এবং মানুষের ক্রয় ক্ষমতার পরিবর্তনকে দায়ী করা হচ্ছে।

টেকিলার প্রধান উপাদান অ্যাগেভ-এর অতিরিক্ত উৎপাদনও একটি উদ্বেগের কারণ। এর ফলে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমে গেছে, যা চাষিদের মুনাফাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

অন্যদিকে, মেক্সিকো থেকে টেকিলার উৎপাদনে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। এই শুল্ক চুক্তিটি এখনো কার্যকর না হলেও, ভবিষ্যতে এর প্রভাব পড়তে পারে।

বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মেক্সিকোর একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (USMCA) বিদ্যমান। এর ফলে শুল্কমুক্তভাবে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা যাচ্ছে।

তবে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর শুল্কের বিষয়ে পরিবর্তন আসতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, অনেক টেকিলার কোম্পানি তাদের ব্যবসার কৌশল পরিবর্তন করতে শুরু করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ‘পান্তালোনস’ নামক একটি ব্র্যান্ড, যারা অপেক্ষাকৃত কম দামের টেকিলার উপর জোর দিচ্ছে।

তারা তাদের পণ্যের গুণগত মান বজায় রেখে ভোক্তাদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করতে চাইছে। পান্তালোনস-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্ড্রু ক্রিসোমালিস বলেন, “অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে মানুষ এখন আরও সতর্ক।

তাই, ভালো মানের পণ্য সরবরাহ করতে পারলে, বাজারে টিকে থাকা সম্ভব।”

এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোম্পানিগুলো নতুন বাজার খুঁজছে। ‘পান্তালোনস’ যুক্তরাজ্যে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে।

তারা সেখানকার একটি সুপারমার্কেট চেইনের সঙ্গে চুক্তি করেছে এবং বিপণনের জন্য অভিনেতা ম্যাথু ম্যাককনাঘের মতো তারকাশক্তি ব্যবহার করছে।

টেকিলার বাজারের এই পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থির পরিস্থিতিতে, বাজারের চাহিদা ও ভোক্তাদের রুচির পরিবর্তনের দিকে নজর রাখা অপরিহার্য।

একই সঙ্গে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি এবং শুল্কের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য, পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখা, সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা এবং নতুন বাজার খোঁজার মতো বিষয়গুলো ব্যবসার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সহায়ক হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *