মেক্সিকোর ঝলমলে প্রদেশ, জালিস্কো’র কথা উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে টেquilа-র ছবি। বিশ্বজুড়ে এই পানীয়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছে, আর এর পেছনের গল্পটাও বেশ আকর্ষণীয়।
শুধু একটি পানীয় হিসেবেই নয়, টেquilа-র সঙ্গে জড়িয়ে আছে মেক্সিকোর সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর এক বিশেষ ধরনের কৃষি পদ্ধতি। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, এই আগাভে-ভিত্তিক পানীয়টি কীভাবে তৈরি হয়, আর এর স্বাদ-বৈচিত্র্যের রহস্য কী।
টেquilа-র জন্মস্থান জালিস্কো প্রদেশে, যেখানে এর উৎপাদন প্রক্রিয়া কয়েক শতাব্দী পুরনো। এখানকার মাটি ও জলবায়ু, যা ‘টেরোয়ার’ নামে পরিচিত, টেquilа-র স্বাদে ভিন্নতা আনে।
যেমন, এখানকার আগাভে ক্ষেতগুলো দেখলে মন জুড়িয়ে যায়। এই ক্ষেতের কর্মীরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে টেquilа তৈরির কৌশল ধরে রেখেছেন। ‘জিমাডোর’ নামের দক্ষ কর্মীরা আগাভে গাছের পাতা কেটে, ভেতরের অংশ বের করেন।
তারপর এই কান্ডগুলো বিশেষ প্রক্রিয়ায় সেদ্ধ করা হয়, যা এর স্বাদ আরও গভীর করে তোলে।
টেquilа মূলত ‘ব্লু অ্যাগাভে’ নামক একটি বিশেষ প্রজাতির গাছ থেকে তৈরি হয়। এই গাছের চাষ থেকে শুরু করে টেquilа বোতলবন্দী করা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে থাকে নিপুণতা।
জালিস্কোর ‘লোল্যান্ড’ অঞ্চলে আগাভে গাছের স্বাদ এক রকম, আবার ‘হাইল্যান্ড’ অঞ্চলে এর স্বাদ ভিন্ন। হাইল্যান্ডের মাটি, যা লোহার উপাদান সমৃদ্ধ, সেখানকার আবহাওয়ার কারণে আগাভে ধীরে ধীরে মিষ্টি হয় এবং টেquilа-তে ভ্যানিলার একটি বিশেষ স্বাদ যোগ করে।
টেquilа তৈরির প্রক্রিয়া শুধু একটি পানীয়ের উৎপাদন নয়, বরং এটি একটি শিল্প। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছে কারিগর, কৃষক এবং স্থানীয় সংস্কৃতি।
জালিস্কোর রাজধানী গুয়াদালাহারায় গেলে আপনি কান্টিনা সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। এখানে, মার্গারিটার বদলে ‘কানতারিতো’র মতো পানীয় উপভোগ করা যায়, যা টেquilа-র আসল স্বাদ তুলে ধরে।
এছাড়াও, জালিস্কোর স্থানীয় বাজারগুলোতে গেলে টেquilа তৈরির সাথে জড়িত নানান উপকরণ ও ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। টেquilа-র স্বাদ নেওয়ার পাশাপাশি, এর পেছনের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারাটাও একটা দারুণ অভিজ্ঞতা।
টেquilа-র উৎপাদনে মাটির গুণাগুণ, জলবায়ু এবং কারিগরদের দক্ষতা – এই সবকিছু মিলে তৈরি হয় এক অসাধারণ পানীয়। এটি শুধু মেক্সিকোর একটি পানীয় নয়, বরং বিশ্বজুড়ে মানুষের কাছে একটি সংস্কৃতির প্রতীক।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক