ক্রফোর্ডের অবিশ্বাস্য জয়: ক্যানোকে হারিয়ে বিশ্বকে তাক লাগালেন!

ঐতিহাসিক জয়, ক্যানেলো আলভারেজকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলেন টেরেন্স ক্রফোর্ড।

লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত এক শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ক্যানেলো আলভারেজকে হারিয়ে নতুন ইতিহাস গড়লেন মার্কিন বক্সার টেরেন্স ক্রফোর্ড। শনিবার রাতের এই লড়াইয়ে ক্রফোর্ড সর্বসম্মতভাবে জয়ী হয়ে সুপার মিডলওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট জয় করেন।

একইসঙ্গে, তিনিই প্রথম পুরুষ বক্সার যিনি তিনটি ভিন্ন ওজন শ্রেণীতে একীভূত খেতাব জিতেছেন।

ম্যাচের ফলাফল ছিল বিচারকদের চোখে সুস্পষ্ট। টিম চ্যাথাম এবং ম্যাক্স ডেলুকা ক্রফোর্ডকে ১১৫-১১৩ পয়েন্ট দেন, যেখানে স্টিভ ওয়েসফিল্ডের স্কোর ছিল ১১৬-১১২।

সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর হিসেবে, ৩৭ বছর বয়সী ক্রফোর্ডের পক্ষে স্কোর ছিল ১১৮-১১০।

এই জয়ের পর ক্রফোর্ড এতটাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন যে, জয় ঘোষণার আগেই হাঁটু গেড়ে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

পরে তিনি বলেন, “আমি জানি আমি কী করতে পারি। আমার জন্য এটা কোনো আশ্চর্যের বিষয় নয়। আপনারা হয়তো বিশ্বাস করেননি, তাই আপনাদের কাছে এটা অপ্রত্যাশিত।”

এই ম্যাচে রেকর্ড ৭0,৪৮২ জন দর্শক উপস্থিত ছিলেন, যা লাস ভেগাসের কোনো বক্সিং ম্যাচের জন্য সর্বোচ্চ।

এমনকি ক্যানেলো আলভারেজের সমর্থকরাও ক্রফোর্ডের সমর্থনে হওয়া চিৎকারে বাধা দেননি, যা ম্যাচের গভীরতা বুঝিয়ে দেয়।

ক্যানেলো আলভারেজের জন্য এটি ছিল গত ৭ মে, ২০২২ তারিখে দিমিত্রি বিভোলের কাছে সর্বসম্মতভাবে হারার পর প্রথম পরাজয়।

মেক্সিকোর এই ৩৫ বছর বয়সী বক্সারকে অনেকেই ফেভারিট হিসেবে ধরলেও, ক্রফোর্ডের দৃঢ়তা এবং কৌশল তাকে পরাস্ত করতে যথেষ্ট ছিল।

ম্যাচ শেষে আলভারেজ বলেন, “আমরা জানতাম ক্রফোর্ড একজন দারুণ যোদ্ধা। আমি আমার সেরাটা দিয়েছি, কঠোর প্রশিক্ষণ নিয়েছি।

জয়ের পুরো কৃতিত্ব তার প্রাপ্য। আমি তার কৌশল বুঝতে পারিনি।”

এই ঐতিহাসিক লড়াই শুধু স্টেডিয়ামেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং বিশ্বজুড়ে বক্সিং প্রেমীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল।

ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয় নেটফ্লিক্সে, যা সাধারণত পে-পার-ভিউ-এর মাধ্যমে হওয়া বক্সিং ম্যাচগুলোর চেয়ে অনেক বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছেছিল।

খেলাটির আকর্ষণ ছিল এতটাই বেশি যে, স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন মাইক টাইসন, ইভান্দার হোলিফিল্ড, রয় জোনস জুনিয়র, টমাস হার্নস এবং হুলিও সিজার চাভেজের মতো কিংবদন্তি বক্সাররা।

এছাড়াও, অভিনেত্রী সোফিয়া ভার্গারা, অভিনেতা মাইকেল জে ফক্স, এবং অভিনেত্রী শার্লিজ থেরন সহ আরও অনেকে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী ছিলেন।

বক্সিং জগতে এই জয় নিঃসন্দেহে ক্রফোর্ডের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে।

খেলাটির আকর্ষণ এবং দর্শকদের মধ্যে এর প্রভাব ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *