টেসলার বিক্রি কমেছে, কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ইলন মাস্কের কোম্পানি।
বৈদ্যুতিক গাড়ির (Electric Vehicle – EV) নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার ব্যবসা ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে ১৩ শতাংশ কমে গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এর পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।
এর মধ্যে অন্যতম হলো, টেসলার গাড়ির ডিজাইন পুরনো হয়ে যাওয়া, বাজারে অন্যান্য কোম্পানির সাথে তীব্র প্রতিযোগিতা এবং টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (Chief Executive Officer – CEO) ইলন মাস্কের কিছু বিতর্কিত রাজনৈতিক মন্তব্য।
জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে টেসলা বিশ্বব্যাপী ৩,৩৬,৬৮১টি গাড়ি সরবরাহ করেছে। যেখানে আগের বছর একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ৩,৮৭,০০০।
যদিও কোম্পানিটি তাদের গাড়ি বিক্রির জন্য বিভিন্ন অফার ও ছাড় ঘোষণা করেছিল, তবুও বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
বাজার বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল, এই সময়ে টেসলার ৪,০৮,০০০টি গাড়ি বিক্রি করার সম্ভাবনা রয়েছে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ড্যান আইভেস বলেছেন, টেসলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন উভয় বাজারেই চাহিদা কমে গেছে। ইউরোপেও তারা চাপের মুখে রয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন, “ব্র্যান্ড সংকট”-এর কারণে টেসলার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট এবং অন্যান্য বিশ্লেষকরা সবাই একমত যে প্রথম ত্রৈমাসিকের ফলাফল খারাপ হতে চলেছে।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে টেসলার শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। বিশ্লেষকদের মতে, এর কারণ ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারের সঙ্গে টেসলার ভালো সম্পর্ক তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাওয়া।
এছাড়া, ইলন মাস্কের কিছু বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে অনেকে টেসলার গাড়ি বয়কট করতে শুরু করেন।
বর্তমানে বাজারে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা কিছুটা কমতির দিকে। অনেকে তাদের পুরনো মডেলের পরিবর্তে নতুন মডেলের জন্য অপেক্ষা করছেন, যা টেসলার বিক্রি কমার অন্যতম কারণ হতে পারে।
ইতোমধ্যে, টেসলার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। অনেক ক্রেতা তাদের গাড়িতে এমন স্টিকার লাগিয়েছেন, যেখানে লেখা ছিল “ইলন পাগল হওয়ার আগে আমি এই গাড়িটি কিনেছিলাম।”
ইউরোপের বাজারেও টেসলার বিক্রি কমেছে, বিশেষ করে জার্মানিতে। কারণ, মাস্ক একটি চরম ডানপন্থী দলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন।
বর্তমানে টেসলার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছে চীনের কোম্পানি বিওয়াইডি (BYD)। বিওয়াইডি সম্প্রতি এমন প্রযুক্তি তৈরি করেছে, যা তাদের গাড়িকে মাত্র পাঁচ মিনিটে চার্জ করতে সক্ষম করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেসলার এই পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে। একইসঙ্গে, বাংলাদেশের বাজারে বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রসারের ক্ষেত্রেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
টেসলার এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস