বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে প্রবেশ করতে চলেছে টেসলা, তেলের দেশ সৌদি আরবে। আগামী ১০ এপ্রিল দেশটিতে তাদের গাড়ির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং প্রযুক্তি ‘সাইবারক্যাব’ এবং হিউম্যানয়েড রোবট ‘অপটিমাস’-এর মত বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে।
সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে টেসলার ব্যবসা কিছুটা কমে যাওয়ায় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইলন মাস্কের বিতর্কিত ভূমিকার মধ্যে তাদের এই পদক্ষেপ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
টেসলার এই সময়ে সৌদি আরবে প্রবেশ করাটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ বিশ্বজুড়ে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়লেও, সৌদি আরবে এখনো এর বাজার সেভাবে প্রসারিত হয়নি।
হিসাব বলছে, দেশটিতে মোট গাড়ির বিক্রয়ের মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি হলো বৈদ্যুতিক গাড়ির দখলে।
তবে টেসলার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা বিওয়াইডি (BYD)। গত বছর বিওয়াইডি ১০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে, যেখানে টেসলার বিক্রয় ছিল প্রায় ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়াও, বিওয়াইডি-র অতি দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি টেসলার জন্য উদ্বেগের কারণ। তাদের নতুন সিস্টেমে মাত্র ৫ মিনিটে প্রায় ২৫০ মাইল পথ চলার জন্য চার্জ দেওয়া সম্ভব, যেখানে টেসলার সুপারচার্জার ব্যবহার করে ২০০ মাইল চার্জ করতে ১৫ মিনিট সময় লাগে।
ইউরোপেও টেসলার ব্যবসা কমেছে। ইউরোপীয় অটোমোবাইল প্রস্তুতকারকদের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে তারা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কম গাড়ি বিক্রি করেছে।
অন্যদিকে, টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্কের বিতর্কিত কিছু পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রেও অনেকে তাদের গাড়ি কিনতে আগ্রহ হারাচ্ছে।
সরকারি বিভিন্ন পদে তার ভূমিকা এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো সিদ্ধান্তের কারণে অনেকে অসন্তুষ্ট। এমনকি, টেসলার শোরুম, চার্জিং স্টেশন এবং গাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে।
বিষয়টি নিয়ে তদন্তের জন্য ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) একটি বিশেষ দল গঠন করেছে।
এসব কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে টেসলার শেয়ারের প্রতি আগ্রহ কমেছে। ডিসেম্বরে শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ শতাংশ দর পতন হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশেও পরিবেশবান্ধব গাড়ির চাহিদা বাড়ছে। যদিও এখনো পর্যন্ত বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার সেভাবে প্রসারিত হয়নি, তবে দূষণমুক্ত পরিবেশের কথা চিন্তা করে অনেকেই এই ধরনের গাড়ির দিকে ঝুঁকছেন।
সরকারও চাইছে পরিবেশ সুরক্ষায় বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়াতে। টেসলার এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের বাজারেও বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রসারের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন