টেসলার শেয়ারের উত্থান: ফের কি ধস নামবে?

বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে টেসলার শেয়ারের দামে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি কয়েকদিনে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও, এই উত্থান কতটা টেকসই হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

মূলত ইউরোপ ও চীনে টেসলার বিক্রি কমে যাওয়া, সেই সাথে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের বিতর্কিত কিছু পদক্ষেপের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

গত কয়েক মাসে টেসলার শেয়ারের দর উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছিল। তবে, গত কয়েকদিনে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন আশা জাগিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, শেয়ারের দর কমে যাওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ ছিল। এর মধ্যে অন্যতম হলো বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে ইউরোপ ও চীনে, বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা।

একই সাথে, টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের কিছু বিতর্কিত রাজনৈতিক মন্তব্য ও পদক্ষেপের কারণেও অনেকে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছিলেন।

শেয়ারের এই উত্থানের পেছনে কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। সম্ভবত, অনেক বিনিয়োগকারী মনে করছেন যে শেয়ারের দর এখন বেশ কম দামে পাওয়া যাচ্ছে।

এছাড়া, কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, টেসলার বিক্রি সংক্রান্ত সমস্যাগুলো স্বল্পমেয়াদী এবং ভবিষ্যতে কোম্পানির ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, বাজারে টিকে থাকতে হলে টেসলাকে আরও অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।

টেসলার জন্য সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো চীনের বাজারে তাদের অবস্থান। চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বিওয়াইডি (BYD)-এর সাথে তাদের তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে।

বিওয়াইডি এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে টেসলার শীর্ষস্থান দখলের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। গত বছর টেসলার বিক্রি সামান্য হ্রাস পেয়েছে, যা তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল।

ইলন মাস্কের কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণেও টেসলার ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মাস্কের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং সামাজিক মাধ্যমে বিতর্কিত মন্তব্য অনেক বিনিয়োগকারীর মধ্যে অসন্তুষ্টি তৈরি করেছে।

অনেকে মনে করছেন, মাস্ক এখন টেসলার চেয়ে অন্যান্য বিষয়ে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেসলার জন্য এই বছরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোম্পানিকে প্রমাণ করতে হবে যে তারা বাজারের অস্থিরতা এবং তীব্র প্রতিযোগিতা সত্ত্বেও টিকে থাকতে পারে।

টেসলার পক্ষ থেকে স্ব-চালিত ট্যাক্সি (robotaxi) চালুর পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা তাদের জন্য একটি বড় সুযোগ হতে পারে। তবে, এই ধরনের প্রযুক্তি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে এবং এর সফল বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, টেসলার প্রথম ত্রৈমাসিকের বিক্রয় প্রতিবেদনে দুর্বলতা দেখা যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, শেয়ারের এই ঊর্ধ্বগতি কতদিন বজায় থাকবে, তা বলা কঠিন।

বিনিয়োগকারীদের তাই এখন খুব সতর্ক থাকতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *