আতঙ্কে টেসলার বিনিয়োগকারীরা! কী হতে চলেছে?

টেসলার শেয়ারে অস্থিরতা, বিশ্লেষকদের সতর্কবার্তা।

বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান টেসলার শেয়ারের দামে সম্প্রতি বেশ পতন দেখা যাচ্ছে। ওয়াল স্ট্রিটের বিশ্লেষকদের অনেকেই এখন এই কোম্পানির ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান।

তাদের মতে, কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে টেসলার ব্র্যান্ডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর ফলস্বরূপ, অনেক বিশেষজ্ঞই এখন শেয়ার বিক্রি করার পরামর্শ দিচ্ছেন।

গত কয়েক সপ্তাহে, টেসলার শেয়ারের ভবিষ্যৎ দর (price target) কমিয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষকেরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ডয়েচে ব্যাংক, আরবিসি ক্যাপিটাল মার্কেটস, স্টিফেল নিকোলাস এবং পাইপার স্যান্ডলার।

তাদের মতে, মাস্কের কিছু পদক্ষেপের কারণে বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়েছেন। বিশেষ করে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের ঘনিষ্ঠতা অনেককে হতাশ করেছে।

ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের ড্যান আইভেস এক বিবৃতিতে টেসলার শেয়ারের ১২ মাসের লক্ষ্যমাত্রা ৪৩ শতাংশ কমিয়ে দেন, যা বাজারকে আরও হতাশ করে। এর ফলে বাজারে টেসলার শেয়ারের দাম কমে যায় এবং বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেন।

শেয়ারের দাম কমার পেছনে আরও একটি বড় কারণ হলো টেসলার বিক্রয় হ্রাসের প্রবণতা। যদিও কোম্পানি এখনো দীর্ঘমেয়াদে ভালো করবে বলে অনেকের ধারণা, তারপরও বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে চীনে, বিক্রি কমে যাওয়াটা উদ্বেগের কারণ।

চীন বিশ্বের বৃহত্তম বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার এবং টেসলার জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। বিশ্লেষকদের মতে, চীনের বাজারে মার্কিন শুল্ক নীতির প্রতিক্রিয়া এবং মাস্কের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ভবিষ্যতে কোম্পানির জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

কিছু বিশ্লেষক অবশ্য এখনো টেসলার শেয়ার কেনার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাদের মতে, দীর্ঘমেয়াদে এই কোম্পানির ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, মাস্কের রাজনৈতিক অবস্থান ব্র্যান্ডের ক্ষতি করেছে এবং নিকট ভবিষ্যতে এর প্রভাব আরও বাড়তে পারে। জেপি মর্গান চেজ এবং ওয়েলস ফার্গোর মতো কিছু প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষকেরা বিনিয়োগকারীদেরকে টেসলার শেয়ার বিক্রি করার পরামর্শ দিয়েছেন।

তাদের আশঙ্কা, আগামী এক বছরে টেসলার শেয়ারের মূল্য আরও ৪০ শতাংশের বেশি কমতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেসলার প্রথম প্রান্তিকের বিক্রয় এবং উৎপাদনের তথ্য প্রকাশের পর তাদের পূর্বাভাস ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তাদের মতে, ভোক্তাদের মধ্যে টেসলার চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

সামগ্রিকভাবে, টেসলার ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন পর্যন্ত অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *