টেসলা ধ্বংসের ডাক: রাস্তায় নেমে এল জনতা, মাস্কের বিরুদ্ধে ফুঁসছে বিশ্ব!

বৈশ্বিক প্রতিবাদের মুখে টেসলা: ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন। বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জোরালো হচ্ছে।

প্রতিবাদকারীরা মাস্কের নীতি এবং তার বিশাল সম্পদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন, যা তাদের মতে, শ্রমিক শ্রেণির মানুষের অধিকারকে খর্ব করে। এই প্রতিবাদের মূল কারণ হলো, মাস্কের বিভিন্ন পদক্ষেপ, যা তারা ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের প্রতীক হিসেবে দেখছেন।

“টেসলা টেকডাউন” (Tesla Takedown) নামে পরিচিত এই আন্দোলনে, মানুষজন টেসলা গাড়ি বিক্রি করতে এবং টেসলার শেয়ার থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে উৎসাহিত হচ্ছেন।

প্রতিবাদকারীরা বলছেন, মাস্ক তার ক্ষমতা ব্যবহার করে এমন সব নীতি তৈরি করছেন যা সমাজের ক্ষতি করছে।

এই প্রতিবাদের ঢেউ ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীরা টেসলার কারখানার বাইরে এবং শোরুমের সামনে জড়ো হয়ে মাস্কের নীতির তীব্র সমালোচনা করছেন।

তাদের মূল অভিযোগ হলো, মাস্কের কর্মীরা সরকারি সুযোগ সুবিধা কমানোর চেষ্টা করছেন এবং ফেডারেল সরকারের কর্মীদের বেতন কমানোর চেষ্টা করছেন।

বিক্ষোভকারীরা মনে করেন, মাস্কের এই ধরনের পদক্ষেপ সমাজের দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এই প্রতিবাদের মধ্যেই টেসলার বিরুদ্ধে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। গত সপ্তাহে, লাস ভেগাসে একটি টেসলা মেরামতি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এছাড়াও, বিভিন্ন স্থানে টেসলা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে, ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) সহিংসতা বন্ধ করতে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে।

এফবিআই এই ধরনের ঘটনাগুলোকে “সন্ত্রাসী কার্যকলাপ” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

এদিকে, টেসলার শেয়ারের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে, টেসলার শেয়ারের দাম প্রায় ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।

মাস্ক নিজে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, টেসলার বিরুদ্ধে হওয়া এসব ভাঙচুরের ঘটনা তাদের ব্যবসার ক্ষতি করছে।

তিনি আরও বলেছেন, তার কোম্পানির ক্ষতির কারণ হলো, তিনি সরকারের সঙ্গে যুক্ত আছেন।

বিক্ষোভকারীদের একজন, মারিসা ডেলিন, জানান, তিনি আগে কখনো টেসলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেননি, তবে মাস্কের মূল্যবোধের সঙ্গে তার একমত হতে পারছেন না।

তিনি ভবিষ্যতে আরও প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

বিক্ষোভকারীরা চান, সাধারণ মানুষ তাদের অর্থ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিবাদে সামিল হোক, বিশেষ করে যখন এটি টেসলার মতো প্রতিষ্ঠানের মূল্যের ওপর প্রভাব ফেলে।

টেসলার বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদগুলো বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্যের একটি প্রতিচ্ছবি।

বিক্ষোভকারীরা একটি ন্যায়সংগত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *