trade war

বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রস্তুতকারক কোম্পানি টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্কের কিছু সিদ্ধান্তের কারণে বেশ বিপাকে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। একদিকে যেমন মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব, তেমনই মাস্কের বিতর্কিত কিছু পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মাস্কের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। এই সম্পর্কের কারণে একদিকে যেমন ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির প্রতি সমর্থন জানানো নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তেমনই চীনের বাজারেও ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

বর্তমানে টেসলার সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো হলো— বাণিজ্য শুল্কের প্রভাব, চীনের বাজারে টিকে থাকা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, টেসলার জন্য শুল্কের সমস্যা একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। যদিও অন্যান্য অনেক গাড়ির প্রস্তুতকারক কোম্পানির তুলনায় টেসলা এক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে, কারণ তারা তাদের দুটি বিদেশি কারখানা থেকে গাড়ি আমদানি করে না এবং তাদের তৈরি করা গাড়িতে অন্যান্য কোম্পানির তুলনায় কম বিদেশি যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়।

তবে, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে টেসলাকে বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। চীনের পক্ষ থেকে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের কারণে টেসলার উচ্চ-মূল্যের মডেল এস এবং মডেল এক্স-এর বিক্রি কমে গেছে।

টেসলার জন্য চীন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। গত বছর চীনে টেসলার আয় ছিল প্রায় ২০.৯ বিলিয়ন ডলার, যা তাদের মোট আয়ের ২১ শতাংশ। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক নীতির কারণে চীনের বাজারে তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের বাজারে টেসলার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তাদের কৌশলগত সিদ্ধান্তের ওপর।

অন্যদিকে, ইলন মাস্কের কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডও টেসলার জন্য সমস্যা তৈরি করেছে। মাস্ক প্রায়ই ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যা অনেক গ্রাহক এবং বিনিয়োগকারীর মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।

এমনকি টেসলার কারখানার সামনে বিক্ষোভ এবং ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে।

শেয়ারহোল্ডাররা জানতে চান, মাস্কের এই রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা কোম্পানির ব্র্যান্ডের ওপর কেমন প্রভাব ফেলছে। কোম্পানি কি এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে? এমন সব প্রশ্ন এখন বিনিয়োগকারীদের।

ইতোমধ্যে টেসলার পক্ষ থেকে স্ব-চালিত ট্যাক্সি এবং মানুষের মতো দেখতে রোবট তৈরির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে, এই প্রকল্পগুলো এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।

এমন পরিস্থিতিতে, বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান।

বিশ্লেষকরা বলছেন, টেসলার শেয়ারের দাম কমে যাওয়ার পেছনে বাণিজ্য যুদ্ধ, মাস্কের বিতর্কিত মন্তব্য এবং তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বিশেষভাবে দায়ী। চীনের বাজারে টিকে থাকা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করতে না পারলে, টেসলার জন্য ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *