টেক্সাসে অ্যাপ স্টোর ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই বাধ্যতামূলক করতে নতুন আইন স্বাক্ষর করেছেন গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত ‘টেক্সাস অ্যাপ স্টোর অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যাক্ট’ নামে পরিচিত বিলটিতে অনুমোদন দেন তিনি।
নতুন এই আইনের ফলে গুগল এবং অ্যাপলের মতো প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে তাদের অ্যাপ স্টোর ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই করতে হবে।
এই আইনটি মূলত অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষার উদ্দেশ্যে প্রণীত হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হলো, অ্যাপ স্টোর থেকে কোনো অ্যাপ ডাউনলোড বা কেনার আগে ব্যবহারকারীর বয়স নিশ্চিত করা এবং নাবালকদের ক্ষেত্রে তাদের অভিভাবকদের সম্মতি নেওয়া।
শুধু তাই নয়, অভিভাবকদের অনুমোদন প্রদানের আইনি অধিকার আছে কিনা, সেটিও যাচাই করতে হবে অ্যাপ স্টোর কর্তৃপক্ষকে।
এই আইনের ফলে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ, বয়স যাচাইয়ের জন্য ব্যবহারকারীদের, বিশেষ করে যাদের বয়স কম, তাদের আইডি বা মুখ স্ক্যান-এর মতো সংবেদনশীল তথ্য প্রদান করতে হতে পারে।
এমনকি যারা সাধারণ ওয়েদার অ্যাপের মতো কোনো অ্যাপ ব্যবহার করতে চান, তাদেরও এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের আইন প্রয়োগ করা কঠিন হতে পারে এবং এটি ব্যবহারকারীদের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
তবে, অ্যাপল কর্তৃপক্ষের মতে, তারা এমন একটি ‘এজ অ্যাস্যুরেন্স’ ফিচার তৈরি করতে যাচ্ছে, যা অভিভাবকদের তাদের সন্তানের বয়স সম্পর্কিত তথ্য অ্যাপ ডেভেলপারদের সাথে শেয়ার করতে সাহায্য করবে। এর ফলে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত ডেটা সংগ্রহ করার প্রয়োজন হবে না।
অন্যদিকে, গুগল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এই আইনের পক্ষে থাকা কিছু সামাজিক মাধ্যম, যেমন- মেটা, স্ন্যাপ এবং এক্স (সাবেক টুইটার), মনে করে যে অ্যাপ স্টোরগুলোর ব্যবহারকারীর বয়স যাচাই করার দায়িত্ব নেওয়া উচিত।
তাদের মতে, এর ফলে ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার প্রয়োজনীয়তা কমবে।
সাম্প্রতিক সময়ে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে শিশুদের যৌন হয়রানি এবং অসুস্থতাজনিত কন্টেন্টের (যেমন, খাদ্যাভ্যাস সংক্রান্ত সমস্যা) শিকার হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এছাড়াও, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।
সমালোচকরা বলছেন, অনেক সময় শিশুরা তাদের বয়স গোপন করে এইসব প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করে। তাই, বয়স যাচাইকরণ প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এই আইনটি কার্যকর হলে, ব্যবহারকারীদের ডেটা সুরক্ষার পাশাপাশি শিশুদের অনলাইনে নিরাপদ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন