টেক্সাসের এক শিক্ষক, রাসেল লেহি, ব্যাংকের ভুয়া পরিচয়ে আসা প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে জীবনের সঞ্চয় খুইয়েছেন। প্রতারকরা তাকে ব্যাংক কর্মচারী পরিচয় দিয়ে ফোন করে এবং তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কিছু সমস্যা হয়েছে বলে জানায়।
এর ফলে তিনি নিজের কষ্টার্জিত প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকার বেশি (মার্কিন ডলারে $30,000) হারান। সম্প্রতি বিয়ে করা এই শিক্ষক, যিনি সপ্তাহান্তে বাইরে যাওয়া বা ভ্রমণের মতো বিষয়গুলো এড়িয়ে টাকা জমিয়েছিলেন, সেই জমানো অর্থ প্রতারকদের পাতা ফাঁদে হারিয়ে এখন দিশেহারা।
ঘটনাটি ঘটে যখন লেহিকে ফোন করে একটি ভুয়া ব্যাংক প্রতিনিধি দল। তারা জানায়, তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কিছু সন্দেহজনক কার্যকলাপ হয়েছে। এরপর, তারা তাকে একটি নতুন, সুরক্ষিত অ্যাকাউন্টে টাকা সরানোর জন্য প্ররোচিত করে।
সরল বিশ্বাসে, লেহি তাদের কথা মতো কাজ করেন এবং তার সমস্ত সঞ্চয় সেই অ্যাকাউন্টে জমা করেন। পরে তিনি বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে লেহি জানান, “আমি বিশ্বাস করতে পারিনি, তারা কত সূক্ষ্মভাবে জাল বিস্তার করেছে।” তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয়েছিল, পৃথিবীটা যেন আমার কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।”
ভুক্তভোগী শিক্ষক জানান, প্রতারকরা তাকে টেক্সট মেসেজও পাঠিয়েছিল এবং ব্যাংক স্টেটমেন্টের মতো দেখতে কিছু নথিও পাঠিয়েছিল, যা দেখে প্রথমে তার মনে কোনো সন্দেহের উদ্রেক হয়নি।
ঘটনার পরে তিনি দ্রুত তার ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২,০০০ ডলার ফেরত দিতে পারলেও, বাকি ৩০,০০০ ডলার ফেরত দিতে তারা অপারগতা প্রকাশ করে।
কারণ হিসেবে তারা জানায়, লেহির অ্যাকাউন্টে সেই সময় কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না।
এই ঘটনার পরে, লেহি তার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি চান, তার এই ক্ষতির গল্প অন্যদের সতর্ক করুক এবং তারা যেন এমন প্রতারণার শিকার না হন।
তিনি বলেন, “আমি চাই, আমার এই অভিজ্ঞতা অন্যদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হোক। অন্তত আর কারো যেন এতগুলো টাকা এভাবে না হারায়।”
এদিকে, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা তাদের গ্রাহকদের সচেতন করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। তাদের ওয়েবসাইটে কীভাবে এই ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচা যায়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, কোনো গ্রাহক প্রতারিত হলে কী করতে হবে, সে বিষয়েও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনা আমাদের সমাজের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। কারণ, বর্তমানে সাইবার অপরাধ বাড়ছে এবং মানুষ নানাভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছে।
তাই, ব্যাংক এবং গ্রাহক উভয়েরই এ বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। অপরিচিত কারো ফোন বা মেসেজের মাধ্যমে পাওয়া কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই না করে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয়।
তথ্য সূত্র: WFAA