টেক্সাসে বিতর্ক! ক্লাসরুমে দশ আজ্ঞা প্রদর্শনের বিলে গভর্নরের সই!

টেক্সাসে বিদ্যালয়গুলোতে ‘দশ আজ্ঞা’ প্রদর্শনের নির্দেশ, বিতর্কের ঝড়।

যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য টেক্সাসে (Texas) একটি নতুন আইন স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা রাজ্যের সকল সরকারি বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে ‘দশ আজ্ঞা’ প্রদর্শনের বাধ্যতামূলক করেছে। টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট এই বিলটিতে স্বাক্ষর করেছেন। তবে এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং এটি আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়গুলোতে একটি নির্দিষ্ট আকারের (১৬ বাই ২০ ইঞ্চি) পোস্টার বা ফ্রেমে বাঁধানো অবস্থায় ‘দশ আজ্ঞা’ প্রদর্শন করতে হবে। এই নির্দেশনার মূল উদ্দেশ্য হলো, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করা। তবে সমালোচকরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের মূলনীতি – ধর্ম ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণ – এর পরিপন্থী।

এই আইনের বিরোধিতাকারীরা মনে করেন, এর মাধ্যমে বিদ্যালয়গুলোতে একটি বিশেষ ধর্মের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে। তাদের মতে, ‘দশ আজ্ঞা’ কেবল একটি নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারীদের ধর্মীয় বিশ্বাস। টেক্সাসের বিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন ধর্ম ও মতাদর্শের ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করে। সবার প্রতি সমান আচরণ করা উচিত। তাছাড়া, এই ধরনের পদক্ষেপ ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থী হতে পারে।

ইতিমধ্যেই, যুক্তরাষ্ট্রের অন্য একটি অঙ্গরাজ্যে, লুইজিয়ানাতে (Louisiana) একই ধরনের একটি আইন ফেডারেল আদালত কর্তৃক বাতিল করা হয়েছে। আদালত মনে করে, এই ধরনের আইন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। টেক্সাসের এই নতুন আইনটির ভবিষ্যৎ নিয়েও তাই সংশয় দেখা দিয়েছে। আইনটি আদালতে টিকবে কিনা, সেটি এখন দেখার বিষয়।

গভর্নর অ্যাবোট অবশ্য এর আগে, ২০০৫ সালে টেক্সাসের ক্যাপিটলের grounds-এ ‘দশ আজ্ঞা’র একটি স্মৃতিস্তম্ভ রাখার পক্ষে আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়েছিলেন। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। কারণ, এই আইনে সরাসরি বিদ্যালয়গুলোতে একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় পাঠ প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে।

আইনটির সমর্থকরা বলছেন, ‘দশ আজ্ঞা’ যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ও শিক্ষা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের মতে, এটি প্রদর্শনের ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা নৈতিক শিক্ষা লাভ করবে এবং সমাজের প্রতি তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হবে।

তবে, এই আইনটি নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে। ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং রাষ্ট্র ও ধর্মের পৃথকীকরণের প্রশ্নে এটি কিভাবে নিষ্পত্তি হয়, এখন সেটাই দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *