টেক্সাসে বিরল এক আবহাওয়ার ঘটনা, যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র বাতাসের, যা ভেঙে দিয়েছে আগের সব রেকর্ড। গত মঙ্গলবার টেক্সাসের মিডল্যান্ডে একটি বিরল ‘ভাইরগা বোমা’ আঘাত হানে, যার ফলে সৃষ্টি হওয়া ১১১ মাইল প্রতি ঘণ্টা (১৭৯ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা) বেগে বাতাস বয়ে যায়।
আবহাওয়ার ইতিহাসে এই প্রথম মিডল্যান্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও মহাকাশ কেন্দ্রে বাতাসের বেগ এত বেশি রেকর্ড করা হলো। এর আগে, ২০০৭ সালের ২৬শে জুন এখানে ৯৭ মাইল প্রতি ঘণ্টা বেগে বাতাস বয়েছিল।
এই ‘ভাইরগা বোমা’ আসলে কী? এটিকে বুঝতে হলে, আমাদের আবহাওয়ার কিছু বিশেষ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে।
এটি হলো এক ধরনের ‘শুকনো মাইক্রোবার্স্ট’, যা আসলে শক্তিশালী ‘ডাউনবার্স্ট’-এর একটি প্রকার। যখন কোনো ঝড়ের সময় বাতাস উপরের দিকে ওঠে, তখন তা ঠান্ডা হয়ে ঘনীভূত হয় এবং বৃষ্টি তৈরি করে।
এরপর বৃষ্টি ও বাতাস একসঙ্গে ভূপৃষ্ঠের দিকে নেমে আসে। এই প্রক্রিয়াকেই ‘ডাউনবার্স্ট’ বলে।
‘ডাউনবার্স্ট’-এর দুটি রূপ দেখা যায়: একটি হলো ‘ওয়েট ডাউনবার্স্ট’, যেখানে বৃষ্টি ও বাতাস দুটোই মাটিতে পৌঁছায়। অন্যটি ‘ড্রাই ডাউনবার্স্ট’, যেখানে কেবল বাতাসই ভূপৃষ্ঠে আসে।
টেক্সাসে হওয়া ঘটনাটি ছিল ‘ড্রাই ডাউনবার্স্ট’-এর উদাহরণ। ‘ভাইরগা’ হলো এমন বৃষ্টি যা মেঘ থেকে পরে, কিন্তু মাটিতে পৌঁছানোর আগেই বাষ্পীভূত হয়ে যায়।
এই ধরনের ঘটনা সাধারণত শক্তিশালী ঝড়ের সময় ঘটে, তবে এত শক্তিশালী হওয়াটা বিরল। যখন শুষ্ক বাতাস থাকে, তখন এই ঘটনা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
মঙ্গলবার টেক্সাসে যা ঘটেছিল, সেখানে বাতাসের গতি ছিল একটি ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের মতোই, যা সাধারণত ২ ক্যাটাগরির ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতির সমান।
উদাহরণস্বরূপ, ২ ক্যাটাগরির একটি ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতি ৯৬ থেকে ১১০ মাইল প্রতি ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এই তীব্র বাতাসের কারণে মিডল্যান্ডের বিমানবন্দরে তেমন কোনো ক্ষতি না হলেও, ওডেসার কাছে বেশ কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে এবং একটি আধা-ট্রাক উল্টে গেছে।
এছাড়াও, একই এলাকার অন্যান্য ঝড়ের কারণে শক্তিশালী বাতাস ও ধূলিঝড়ের সৃষ্টি হয়।
আবহাওয়ার এই বিরল ঘটনা প্রমাণ করে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে আবহাওয়ার চরম রূপ দেখা যাচ্ছে।
ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন