দেউলিয়া অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে টিজিআই ফ্রাইডে’জের মেনু পরিবর্তন।
যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট চেইন টিজিআই ফ্রাইডে’জ (TGI Fridays), যারা বর্তমানে আর্থিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাদের ব্যবসা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে মেনুতে এনেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হলো— গ্রাহকদের, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। নতুন মেনুতে যুক্ত করা হয়েছে উন্নত মানের খাবার, আকর্ষণীয় ককটেল এবং একটি বিশেষ সস।
দেউলিয়া অবস্থা থেকে উত্তরণের চেষ্টা।
টিজিআই ফ্রাইডে’জ বর্তমানে দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। তারা আশা করছে, এই গ্রীষ্মের মধ্যেই এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। এক সময় তাদের ৬০০-এর বেশি রেস্টুরেন্ট ছিল, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮৫টিতে। এই পরিস্থিতিতে, টিজিআই ফ্রাইডে’জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রে ব্ল্যাঞ্চেট-এর মতে, গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে উন্নত মানের খাবার পরিবেশনের কোনো বিকল্প নেই।
ব্ল্যাঞ্চেট বলেন, “আমরা মেনুর প্রায় ৮৫ শতাংশ পরিবর্তন করেছি, যেখানে খাবারের গুণগত মান ও রান্নার পদ্ধতি উন্নত করা হয়েছে। আমরা আবার হাতে গড়া চিকেন ফিঙ্গার ও স্টেক পরিবেশন শুরু করেছি।”
আর্থিক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি, খাদ্য ব্যবসা খাতেও মন্দা দেখা যাচ্ছে। অনেক চেইন রেস্টুরেন্টেই বিক্রি কমে গেছে, কারণ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে গ্রাহকরা খরচ কমাতে বাধ্য হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে টিজিআই ফ্রাইডে’জের জন্য ঘুরে দাঁড়ানো আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মেনুতে নতুনত্ব।
ব্ল্যাঞ্চেট-এর লক্ষ্য ছিল, দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে মেনুতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা। এর মধ্যে ছিল— পরিচিত খাবারগুলোর মান বৃদ্ধি করা, যেমন— অ্যাপেটাইজার, মাংস এবং ককটেল। এছাড়াও, তরুণ প্রজন্মের রুচি ও চাহিদার কথা মাথায় রেখে মেনুতে কিছু নতুনত্ব যোগ করা হয়েছে।
মেনুর অন্যতম আকর্ষণ হলো নতুন ‘টিজিআই সস’। এই সসটি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বার্গার এবং হাতে গড়া চিকেনের স্বাদ আরও বাড়াবে। এছাড়াও, মোজারেলা স্টিক-এর জন্য বিভিন্ন ধরনের সস-এর (যেমন— ফ্র্যাঙ্ক’স রেডহট বাফেলো, গার্লিক পারমিজান ও হুইস্কি-গ্ল্যাজ) ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেনুতে আরও যোগ হয়েছে উন্নত মানের টেটার টটস এবং ‘বিগ কুইসো এনার্জি বার্গার’-এর মতো আকর্ষণীয় খাবার।
চিকেন এবং স্টেক-এর মানও উন্নত করা হয়েছে। এখন উন্নত মানের উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে এবং রেস্টুরেন্টেই মাংস কাটা হচ্ছে। ব্ল্যাঞ্চেট আরও জানান, তাদের থাই চিকেন সালাদে পোট স্টিকার ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
তবে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে চালু করা সুশির মতো কিছু খাবার মেনু থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ককটেল এবং পানীয়।
খাবারের পাশাপাশি, টিজিআই ফ্রাইডে’জ তাদের পানীয়ের মেনুতেও পরিবর্তন এনেছে। পুরনো দিনের ক্লাসিক ককটেলগুলোকে আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘জ্যাক’স নিউ ফ্যাশনড’, ‘দ্য এলিট’ (একটি লং আইল্যান্ড আইসড টি) এবং ‘স্ট্রবেরি হেননি’। ব্ল্যাঞ্চেট জানিয়েছেন, তাদের পরীক্ষায় দেখা গেছে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রিমিয়াম ককটেল-এর চাহিদা বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, টিজিআই ফ্রাইডে’জের এই পরিবর্তনগুলো তাদের ব্যবসা পুনরুদ্ধারে কতটা সাহায্য করবে, তা সময় বলবে। তবে, বাজারে টিকে থাকতে হলে, খাদ্য ব্যবসায়ীদের নতুনত্ব এবং গ্রাহক রুচির প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন