আশ্চর্য পরিবর্তন! মোষেরা এখন আর খেতের নয়, সৌন্দর্যের প্রতীক!

থাইল্যান্ডের জল মহিষ: এক সময়ের খেটে খাওয়া প্রাণী, এখন সৌন্দর্যের প্রতীক

একসময় যারা ছিল ক্ষেত-খামারের পরিশ্রমী, তারাই আজ থাইল্যান্ডে সৌন্দর্যের প্রতীক। জল মহিষের (Water Buffalo) কথা বলছি, যারা একসময় লাঙল টানত, ভারী বোঝা বইত, তারাই এখন সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে, দৌড় প্রতিযোগিতায় দেখাচ্ছে তাদের তেজ।

থাইল্যান্ডের একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব, যেখানে জল মহিষদের সম্মান জানানো হয়, তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করা হয়।

এই উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয় চোনবুরি শহরে, যা ব্যাংকক থেকে প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত। এখানে জল মহিষদের নিয়ে চলে নানা আয়োজন।

তাদের সাজানো হয়, পরানো হয় ফুলের মালা। কোনো কোনো মহিষের পিঠে চড়ে জকিরা অংশ নেয় ১০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায়। এই উৎসব আসলে থাইল্যান্ডের মানুষের ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির একটি অংশ।

কৃষি কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়ার ফলে একসময় জল মহিষের সংখ্যা কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু এই ধরনের উৎসবগুলি তাদের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়িয়েছে।

শুধু তাই নয়, এটি একটি নতুন শিল্প হিসেবেও স্বীকৃতি লাভ করেছে এবং সরকারও এই বিষয়ে সহযোগিতা করছে।

২০১৭ সাল থেকে থাইল্যান্ড সরকার ‘থাই মহিষ সংরক্ষণ দিবস’ ঘোষণা করেছে।

স্থানীয় সরকারগুলি এখন পশু পালনকারীদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করে থাকে।

যেমন ধরুন, থাওয়াচাই দেং-নগামের কথা।

তিনি পেশায় একজন খাদ্য বিক্রেতা এবং কৃষক। তাঁর পাঁচটি বছর বয়সী মহিষ ‘টড’ এবার সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল।

এই মহিষকে তিনি শখের বশে প্রতিপালন করেন।

তিনি জানান, “মহিষ আমার কাছে পরিবারের সদস্যের মতো। মানুষ মহিষের যত্ন নেয়, আর মহিষ মানুষের।”

এই প্রতিযোগিতায় মহিষদের শিংয়ের আকার, পায়ের গড়ন এবং সামগ্রিক শারীরিক গঠন বিচার করা হয়।

এখানকার জল মহিষগুলোর যত্ন নেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

তাদের প্রতিদিন গোসল করানো হয় এবং ভুট্টা, সয়াবিন, ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার দেওয়া হয়।

এই ধরনের প্রতিযোগিতাগুলো শুধু বিনোদনই দেয় না, বরং থাইল্যান্ডের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

এই উৎসবগুলো জল মহিষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রতীক।

বর্তমানে, বাজারে একটি সাদা রঙের জল মহিষ ১ কোটি ৮০ লক্ষ থাই বাথে (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা) বিক্রি হয়েছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *