৫০ বছর পর: থাইল্যান্ডে শিক্ষার্থীদের চুলের নিয়মে ঐতিহাসিক পরিবর্তন!

থাইল্যান্ডে শিক্ষার্থীদের চুলের কাটিংয়ের ওপর পঞ্চাশ বছর ধরে জারি থাকা কঠোর নিয়ম অবশেষে বাতিল করা হয়েছে। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত এই সংক্রান্ত একটি পুরোনো নির্দেশকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে।

ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগে ১৯৭৫ সাল থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা এই নিয়ম বাতিল করা হয়।

খবর অনুযায়ী, এক সময় থাইল্যান্ডের স্কুলগুলোতে ছাত্রদের জন্য মিলিটারি স্টাইলের চুল এবং ছাত্রীদের কান পর্যন্ত ছোট করে চুল কাটার নিয়ম ছিল। যদি কোনো শিক্ষার্থী এই নিয়ম ভাঙত, তাহলে তাদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হতো।

অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে সবার সামনে অপমানিত হতে হয়েছে, এমনকি তাদের চুলও কেটে দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনার শিকার হওয়া একজন, বারামি চাওয়াওয়ানিচ, যিনি এখন বিশ বছর বয়সী, জানান, স্কুলের সেই দিনের কথা তার এখনো মনে আছে। চুল একটু বড় থাকার কারণে তাকে সবার সামনে অপমানিত হতে হয়েছিল এবং তার চুল অর্ধেক কেটে দেওয়া হয়েছিল।

ক্লাসে ফিরে আসার পর সকলে তাকে নিয়ে হাসাহাসি করেছিল, যা তাকে হতাশ করেছিল।

২০২০ সালে দেশজুড়ে ছাত্র বিক্ষোভ হয়, যেখানে ছাত্ররা তাদের পোশাক এবং চুলের নিয়মের সংস্কারের দাবি জানায়। এই আন্দোলনের ফলস্বরূপ, কর্তৃপক্ষকে নমনীয় হতে হয় এবং স্কুলগুলোকে নিজস্ব নিয়ম তৈরি করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়।

অবশেষে, আদালতের এই রায়ের মাধ্যমে পুরনো কঠোর নিয়ম সম্পূর্ণভাবে বাতিল হয়ে যায়।

আদালতের এই রায়কে অনেকে স্বাগত জানালেও, কিছু মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। তাদের মতে, কিছু স্কুল হয়তো এখনো কঠোর নিয়ম জারি রাখতে পারে।

শিক্ষা বিষয়ক গবেষক, থুনহাভিচ থিটিরাটসাকুল জানিয়েছেন, এই রায় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে, এখন স্কুলগুলোকে তাদের নিয়ম পরিবর্তনে সচেতন হতে হবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদেরও এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে হবে।

আদালতের এই রায়ের ফলে, ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ইচ্ছামতো চুল রাখতে পারবে। তবে, এই পরিবর্তন কতটা কার্যকর হবে, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *